ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরের পুলিশ ওমান ও কাতারের আট জন শেখ ও তিন জন কাজি সহ মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করার পরে শিশু বিবাহের একটি বড় চক্র ধরা পড়েছে।
পুলিশ বলছে, প্রায় এক মাস ধরে নজরদারি আর তথ্য প্রমাণ যোগাড় করে তারা এই চক্রটিকে গ্রেপ্তার করে। ভারতে এসে শিশু কন্যাদের বিয়ে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ওমান ও কাতারের শেখরা।
হায়দ্রাবাদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ভি সত্যানারায়না বলছেন, “কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হতো জাল নিকাহনামা তৈরি করে। তারপরে বিভিন্ন আরব দেশে নিয়ে গিয়ে এই মেয়েদের ৯৯ শতাংশকেই যৌন দাসী হিসাবে ব্যবহার করা হতো। বাকি কয়েকজনকে ঘরের কাজে লাগানো হত।”
জাল নিকাহনামা তৈরি ও চুক্তি বিবাহ প্রথা নামের এই কাজে সাহায্য করত এমন তিনজন কাজিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, ওমান ও কাতারের যে শেখরা ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে এক ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তিও আছেন, যিনি লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটেন।
ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কম বয়সী ভারতীয় কোনও মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে তিন সপ্তাহের জন্য বিয়ে করে নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।
চন্দ্রায়নগুট্টা এলাকার একটি গেস্ট হাউসে পুলিশ যখন তল্লাশি চালায়, সেই সময়ে ৭০ বছর বয়সী এক ওমানি নাগরিকের সঙ্গে ১৫ বছর বয়সী একটি মেয়ের বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
সত্যনারায়নার কথায়, “কয়েকটি সূত্র থেকে আমরা খবর পেয়েছিলাম যে এরকম একটা চক্র চলছে। গত মাসে একটি মেয়েকে উদ্ধার করার পরে আমরা তদন্তে নেমেছি। বিমানবন্দর দিয়ে আরব দেশগুলির যত নাগরিক – বিশেষত শেখরা শহরে ঢুকেছেন, প্রত্যেকের ওপরে নজর রাখা হচ্ছিল। এরা পুরনো হায়দ্রাবাদের মুসলমান প্রধান এলাকাগুলোর নানা হোটেল বা লজে ওঠেন। তারপরে দালালের মাধ্যমে এই নকল বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।”
দালাল চক্র ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন আরব দেশেও। তাদের মাধ্যমেই প্রথম কথাবার্তা চালায় ওই শেখরা। তারপরে নিজেরা ভারতে এসে মেয়ে পছন্দ করে নিয়ে যায়। হায়দ্রাবাদ শহরে এরকম ৩৫ জন দালালকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৫ জনই নারী।
বেশ কয়েকটি হোটেল ও লজে তল্লাশি চালাতে যখন পুলিশ পৌঁছে, সে সময়ে দালালদের নিয়ে আসা মেয়েদের বাছাই করার কাজ হচ্ছিল।
ধৃত আরব শেখরা গত এক সপ্তাহে ১২ টি কমবয়সী মেয়েকে পছন্দ করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এখনও শহর জুড়ে তল্লাসি অভিযান চালাচ্ছে হায়দ্রাবাদ পুলিশের তিনটি দল।