নিজস্ব প্রতিবেদক: নাম বাদশা মিয়া। সাতক্ষীরার পাইলস ডাক্তার নুরুল ইসলামের ছেলে তিনি। সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুন তার মা এই পরিচয় দিয়ে এক সময় প্রতারণা করতেন তিনি। পুলিশে চাকুরি এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলির নামে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এই ভুয়া পরিচয় দিয়ে জেলে আটকাও পড়েছিলেন। একবার পুলিশের পিটুনি, আরেকবার গণপিটুনি খেয়েছিলেন তিনি। পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয় তাকে নিয়ে। সেই বাদশা মিয়া গতকাল ডিবি পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে পরে মুক্তি পেয়েছেন। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে যার নং-৭৩।
এই প্রতারক এবার নিজেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির পরিচয় দেন। আরও বলেন তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি। যদিও এ দুটির কোনটিই আওয়ামীলীগের স্বীকৃত সহযোগী সংগঠন নয়।
সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক আলি আহমেদ হাশেমী জানান, গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মাদক চোরাকারবারী ধরতে তাদের অভিযান চলছিল। শহরের পলাশপোল এলাকায় আদালতপাড়ার পেছনের দিকে এ অভিযান চলাকালে বাধা হয়ে দাঁড়ান বাদশা মিয়া। প্রথমে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের বড় নেতা বলে পরিচয় দেন। বলেন দলের শীর্ষ পর্যায়ে তার ভাল যোগাযোগ রয়েছে। তার দাবি এদের কাউকে গ্রেফতারের চেষ্টা করবেন না। তাছাড়া এখানে মাদক কেনাবেচা বা মাদক ব্যবহার হয় না। এরা সবাই তো আমার লোক, আমার দলের লোক। এদের ধরে আটকে রাখতেও পারবেন না। গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা এসআই লুৎফর রহমান ও তার সহযোগীরা তাকে বারবার বলেন আপনি সরকারি কাজে বাধা দেবেন না। আমাদের দায়িত্ব পালন করতে দিন। সাহায্য করুন। বাদশা উল্টো অভদ্র ভাষায় তাদের গালিগালাজ করেন। পুলিশ, থানা, ওসি, ডিবি সবাইকে নানান অপ্রীতিকর ভাষায় আক্রমন করে বলেন ‘ওরা আমার কি করতে পারে। আমার কথা না মানলে আমিও দেখে নেবো’ এসময় তাদের সাথে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক মো. নাসিরউদ্দিন ছিলেন বলে জানান তিনি। ডিবি পরিদর্শক জানান, বাদশাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয় ডিবিতে। এরপর তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার ও ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবো না বলে মুচলেকা দেন। সন্ধ্যায় তার বাবা নুরুল ইসলামের জিম্মায় দেওয়া হয় বাদশা মিয়াকে। পরে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ডিবি কর্মকর্তা।