নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরাবাসীকে বিনোদন দিতে ব্যাপক আয়োজন ও নিরাপত্তার মধ্যে শুভ উদ্বোধন হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উন্নয়নকল্পে গ্রামীণ হস্তশিল্প ও ঈদ আনন্দ মেলা ২০১৬। ৯টি বিশেষ শর্তে জেলা প্রশাসন মাস ব্যাপী এই মেলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মাঠে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা ইউনিট কমান্ডের আয়োজনে ও সবুজ বাংলা ট্রেড ফেয়ার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা ইউনিট কমান্ডার মো. মোশারফ হোসেন (মশু)’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে, বেলুন ও ফেস্টুন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন করেন সদর -২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর লিয়াকত পারভেজ, সহকারি পুলিশ সুপার হেটকোয়ার্ডার মোস্তফা খসরু, জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ হায়দার আলী তোতা, সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারী শেখ নুরুল হক, জেলা ডেপুটি কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দীক, সদর উপজেলা কমান্ডার মো. হাসানুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফিরোজ হোসেন মোল্যা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ ও সবুজ বাংলা ট্রেড ফেয়ার অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সোহেল প্রমুখ। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আবু বকর সিদ্দিক মেলাটি সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও নিরাপত্তার স্বার্থে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা রয়েছে। মেলার ভিতরে ও বাইরে ২৫ টি অত্যাধুনিক সিটি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ। এছাড়া এলিট ফোর্স, বিএনসিসি এবং প্রশাসনিক নজরদারিতে থাকবে এ মেলাটি। সবুজ বাংলা ট্রেড ফেয়ার অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সোহেল বলেন, সাতক্ষীরাবাসীকে বিনোদন দিতে এখানে থাকছে নাগর দোলা, দরিমন, রেল গাড়ী, মটরসাইকেল গেম ও সাকার্স। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী নিয়ে এ মেলায় থাকছে দেশী বিদেশী স্টল, প্যাভিলন, জামদানি ও কুঠির শিল্প। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংস্কৃতিক শামীমা পারভীন রতœা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মেলা পরিচালনার জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। গত ১০.০৯.২০১৬ তারিখে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তৎকালীন নেজারত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নূর আহমেদ মাছুম স্বাক্ষরিত ০৫.৪৪.৮৭০০.০০০৫.৩৩.০১৯.১৬ – ৮৪৩ স্মারকে দেয়া শর্তগুলো হলো: ১. মেলা চলাকালে কোনো প্রকার জুয়া, হাউজি, অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন বা আপতিকর পাশাক পরিধান করা যাবে না । ২. আয়োজকদের পক্ষ হতে শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর মাধ্যমে (স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নির্দিষ্ট পোশাক ও ব্যাজ থাকতে হবে) আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে এরূপ কোন কার্যকলাপ পরিচালনা করা যাবে না। অশ্লীল ও জনমতে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে এরূপ নৃত্য পরিবেশন/ কার্যকলাপ হতে বিরত থাকতে হবে। এর কোনো প্রকার ব্যত্যয় ঘটলে তার সকল দায় দায়িত্ব আয়োজকদের বহন করতে হবে এবং তাৎক্ষণিক মেলা প্রদর্শনী বন্ধ করে দেয়া হবে। ৩. কোনো প্রকার মাদকদ্রব্য গ্রহণ, পান, সেবন, বিক্রি বা সরবরাহ করা যাবে না। কেউ এরূপ অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্হা গ্রহণ করা যাবে। ৪. কোনো প্রকার জুয়া, হাউজি, লটারি ভিডিও। ভিসিপি প্রদর্শনী, পুতুলনাচ ইত্যাদির আয়োজন করা যাবে না। এরূপ অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত হলে আয়োজকদের আইনগত ব্যবহা গ্রহণ করাসহ তাৎক্ষণিক মেলা বন্ধ করে দেয়া হবে। ৫. অধিক রাত্রি পর্যন্ত মেলা পরিচালনা করা যাবে না সীমিত অ সহনীয় শব্দে মাইক ও বাজনা বাজাতে হবে, যাতে পার্শ্ববর্তী কারোর কোনো প্রকার কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। আযান ও নামাজের সময় অবশ্যই মাইক ও বাজনা বন্ধ রাখতে হবে। ৬. নগ্ন নৃত্য বা অশ্লীল কোনো কার্যক্রম অথবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এরূপ কার্যকলাপ পরিচালনা করা যাবে না। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হবে। ৭. মেলাকে কেন্দ্র করে স্হানীয় জনমনে যাতে কোনো প্রকার বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি না হয় সেদিকে আয়োজকদের সতর্ক দৃষ্টি রেখে যথাযথভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হবে। ৮. অনুষ্ঠান শেষে অনুমোদিত সংস্থা কর্তৃক আয় হিসাব নিরীক্ষণপূর্বক যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ৯. কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে অনুমতি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ যে কোনো কারণে যে কোনো সময় মেলা বন্ধ করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট