এক সন্তানকে সুস্থ করে তুলতে শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় এসেছিলেন শাহ আলম-আকলিমা বেগম দম্পতি। কিন্তু ঢাকায় নেমেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে হারালেন তাদের ছয় মাসের আরেক শিশু সন্তান। নিহত শিশুটির নাম আরাফাত। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর দয়াগঞ্জ এলাকায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের শিকার ওই নারীর নাম আকলিমা বেগম। শিশুটির বাবার নাম শাহ আলম গাজী।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বড় ছেলে আলামিন অসুস্থ থাকায় দুই ছেলেকে নিয়ে সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন শাহ আলম ও আকলিমা দম্পতি। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর থেকে এসে তারা নামেন সদরঘাটে। সেখান থেকে বাবা শাহ আলম বড় ছেলে আলামিনকে নিয়ে শ্যামলীর শিশু হাসপাতালে যান। ছোট ছেলে আরাফাতকে নিয়ে রিকশায় শনির আখড়ায় বোনের বাসায় যাওয়ার সময় পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন আকলিমা। এক ছিনতাইকারী তার ব্যাগ ধরে টান দিলে কোলে থাকা আরাফাত মাটিতে পড়ে যায়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিত্সক আরাফাতকে মৃত ঘোষণা করেন।
আকলিমা বলেন, ‘এক সন্তানকে বাঁচাতে এসে আরেক সন্তানকে হারাবো ভাবতে পারিনি। ওরা আমার শুধু ব্যাগ নিলেও আফসোস ছিল না। কিন্তু ওরা আমার বুকের ধনও কেড়ে নিলো।’
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আনিসুর রহমান জানান, তারা ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় শিশুর বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, রাজধানীজুড়ে বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র চলন্ত রিকশা বা বাসে যাত্রীদের ব্যাগ বা মোবাইল ছিনতাই করে আসছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই চক্রের কোনো সদস্যকে এখনো ধরতে পারেনি। দুই বছর আগেও ধানমন্ডি এলাকায় একজন রিকশাযাত্রী গৃহবধূর ব্যাগ ছিনতাইয়ের সময় তাকে কয়েকশ’ গজ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় গাড়িতে থাকা ছিনতাইকারীরা। এতে ওই গৃহবধূ নিহত হন। গত বছর শাহবাগ মোড়ে এক নারী রিকশা যাত্রীও একই ভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে নিহত হন।