কালিগঞ্জ ব্যুরো: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫‘শ মেট্রিক টন। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫২০ মেট্রিক টন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থ বছরে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রার চেয়ে অধিক ফসল হওয়া ও ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা বোরো ধান চাষের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। তবে সার, বীজ, কিটনাশক পর্যাপ্ত পরিমানে সরবরাহ থাকায় লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন করেছে কৃষকরা। বিগত বছরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পর্যাপ্ত পরিমান ভাল জাতের বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর, বিএডিসি ও কৃষকদের সংগ্রহকৃত বীজ থেকে ভাল ফসল হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফজলুল হক মনি এ প্রতিনিধিকে বলেন। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে বোরো আবাদ মৌসুমে এ বছর ধানের বীজতলা তৈরি, ধানের পাতা সারা, জমিতে চাষাবাদসহ সকল ধরণের কার্যক্রম পুরদমে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। বোরো মৌসুমের শুরুতে চলতি মাসের প্রথম দিকে সারাদেশ জুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে উপজেলা বিভিন্ন এলাকার বহু বীজতলা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। সেখানে আবারও কৃষকরা নতুন করে ধানের বীজতলা তৈরী করেছেন। সরেজমিনে গেলে পাইকাড়া গ্রামের সফল কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর তিনি সাত বিঘা জমি চাষ করেন। এ বছরও তিনি সাত বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করতে মুজুরী, পানি, সার, কিটনাশকসহ সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা তার খরচ হয়েছিল। সময়ে অভাবে সরকারি ধানের বীজ তিনি সংগ্রহ করতে পানেনি। তাই স্থানীয় সারের দোকান থেকে তিনি বীজ সংগ্রহ করেছেন। বিঘা প্রতি ৭ কেজি ধানরে পাতা তৈরী করে এ বছরও তিনি সাত বিঘা জমিতে ধান চাষ করবেন। গত বছর ধানের ফলন ভাল হওয়ায় এবং বেশি দামে ধানেও বিক্রি করেছিলেন। বস্তা প্রতি (৬০ কেজি) সাড়ে ১১‘শ থেকে সাড়ে ১২‘শ টাকা পর্যন্ত ধান বিক্রি করেছেন। এছাড়া ভাড়াশিমলা গ্রামের আব্দুল আজিজ, চরদাহ গ্রামের আব্দুর রউফ, দেয়া গ্রামের শুনিল পাল, কুশুলিয়া গ্রামের গোবিন্দ মন্ডল, কৃষ্ণনগর গ্রামের আব্দুর রশিদ, বিষ্ণপুর গ্রামের আকবর আলী, তারালী গ্রামের স্বপন ঘোষ, নলতা গ্রামের আরশাদ আলী, মৌতলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম, দুলাবালা গ্রামের শহিদুল ইসলামএবছর আমন মৌসুমে বস্তা প্রতি ধানের দাম বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ১৪‘শ থেকে ১৫‘শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে প্রাকৃতিক পরিবেশ যদি ভাল থাকে তবে কৃষকরা জমিতে ভাল ফসল উৎপাদন করবেন এমটি তারা আশা করছেন।