নিজস্ব প্রতিবেদক: “রসুলপুর মৌজায় আমার শ্বশুর ও চাচাতো শ্বশুরের রেকর্ডীয় সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নিয়ে সাইন বোর্ড তুলেছেন জেলা যুবলীগ সভাপতি ও তার দুই সহযোগী সাগর হোসেন ও মজনু গাজি। এর প্রতিবাদ করায় মান্নান গং আমাদের ভয় দেখিয়ে বলছে বেশি বাড়াবাড়ি করলে রসুলপুর গ্রাম থেকে তোদের তাড়িয়ে দেবো। আমরা এ নিয়ে আতংকে আছি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন বসুলপুর গ্রামের আনসার আলির স্ত্রী আ্ফরোজা বেগম। তিনি বলেন মান্নান গং জমি দখল করেও সংবাদ সম্মেলন করে চোখে ধুলো দিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়েছেন। আমি তার পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্য দিতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আফরোজা বেগম আরও বলেন, সিএস ১২৫ খতিয়ানের মালিক কোনাই, হাজের ও পুটে দপ্তরি এবং সিএস ৩৬৬ খতিয়ানের মালিক কোনাই সরদার ও পুটে দপ্তরি। কোনাই ও হাজের পুটের ভাগনে। পুটে দপ্তরি অবিবাহিত অবস্থায় মারা যাওয়ায় তার সমস্ত সম্পত্তির মালিক হন দুই ভাগনে কোনাই ও হাজের। হাজের সরদার নিঃসন্তান হওয়ায় তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ফুনি বিবির নিকট থেকে তার দুই আনা অংশ কিনে নেওয়ার পর সম্পত্তির সম্পূর্ন মালিক হন আমার শ্ব্শুর আহম্মদ সরদার ও চাচাতো শ্বশুর মোহাম্মদ সরদার। উভয়ের পিতা কোনাই সরদার। সেই মোতাবেক আমার শ্বশুরেরা এসএ রেকর্ডের মালিক। আমার স্বামী ও তার চাচাতো ভাই মাঠ পর্চার মালিক। আমাদের নামে মিউটেশন এবং ২০১৭ সাল পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ।
অথচ সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল মান্নান ১২৫ খতিয়ানের সাবেক ২২৫ দাগে ৩০ শতক এবং তার সহযোগী সাগর হোসেন ৩৬৬ খতিয়ানে সাবেক ১৩৫ দাগে ৭৬ শতক জমিতে রাজনৈতিক ক্ষমতা খাটিয়ে রাতের আঁধারে সাইনবোর্ড তুলেছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন রহিম বক্স করিম সরদারের জামাই। তার স্ত্রী ও শাশুড়ি করিম সরদারের অংশ হিসাবে ১৯৬৭ সালে লোকমান খাঁ দিংয়ের নিকট বিক্রি করে দেন। দলিল নম্বর ৫৯৯৯। লোকমান খাঁ বিক্রি করেন সহিল উদ্দিন মন্ডলের নিকট (দলিল নম্বর ১৪৫৫)। সহিলের কাছ থেকে আমার শ্বশুরগন ক্রয় করেন ১৯৭৩ সালে দলিল নম্বর ৩৮৬৭। এই দলিলে রহিম বক্স সরদার সাক্ষি আছেন। অথচ এই বিক্রয়কৃত সম্পত্তি পুনরায় দাবি করে এবং পুটে দপ্তরির ওয়ারেশ দাবি করে মান্নান ও সাগর হোসেনের সহায়তায় রহিম বক্স একটি দেওয়ানি মামলা করে। এই মামলা এখনও চলমান। ২০১৩ সালে তারা জমিতে একটি ঘর তুলে দেয়। বাধা দিলে পরদিনই তা ভেঙ্গে নেয়। তারা পুলিশের কাছে যথাযথ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়। এতো দিন জমিতে স্থিতাবস্থা বিরাজ করছিল। জমির গাছপালা কাটার হুমকি দিলে আমার চাচাতো দেবর ১৪৫ ধারা করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের নিজ দখলে থাকার নির্দেশ দেন। এরপর তারা নীরব থাকার পর হঠাৎ মান্নান, মজনু ও সাগর জমিতে ঘেরা দিয়ে সাইন বোর্ড তোলে। তারা যে ওয়ারেশ কায়েম সার্টিফিকেটের কথা বলেন তা ভুয়া। কারণ ১৯৩৭ সালের সিএস রেকর্ডের ওয়ারেশ কায়েম সার্টিফিকেট দেওয়ার এখতিয়ার পৌরসভার নেই। এই ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে তারা সাইন বোর্ড ঝুলিয়েছেন বলে জানান আফরোজা বেগম। কারণ পুটে দপ্তরির কোনো সন্তান ছিল না। তবু মজনু উল্লেখ করেছে যে পুটের পুত্র পাচকড়ি সরদার। এটা মিথ্যা কথা। পুটে রহিম বক্সের পিতাও নন। রহিমের পিতার নাম হাতেম সরদার। পাচকড়ির নামে কোনো রেকর্ড নেই।
আমরা মান্নান, সাগর ও মজনু গাজির তোলা সাইনবোর্ড নামিয়ে দিতে চাই। এজন্য প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন আফরোজা বেগম। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. আলফাজউদ্দিন সোহাগ, মো. সালাহউদ্দিন, সুফিয়া খাতুন, গোলাম রহমান, মোয়াজ্জেম হাসান, সাইফুল ইসলাম, আলিমুন হোসেন সাগর, আকবর হোসেন প্রমুখ।
পূর্ববর্তী পোস্ট