ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী প্রতিরোধ আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস-এর শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তাকে বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক হামলায় দায়ী করা হয়েছে। সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্তির কারণে তিনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেন।
২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন ফিলিস্তিনিরা। ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইন্তিফাদা বা সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ট্রাম্প আর নেতানিয়াহু’র ছবি পুড়িয়ে, আমেরিকা-ইসরায়েলের পতাকা জ্বালিয়ে প্রতিরোধ শুরু করে হামাস সমর্থকরা। বুধবার সংগঠনটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে হানিয়ার সংশ্লিষ্টতা, সশস্ত্র কার্যক্রমের ইন্ধন এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ইসরায়েলের ওপর ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত হানিয়া। এছাড়া সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১৭ মার্কিন নাগরিক হত্যায় হামাস দায়ী।
হামাসের দাবি, ফিলিস্তিনিদের রাজধানী নির্ধারণের অধিকার আমেরিকাকে কেউ দেয়নি। আর হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, ইসরায়েল নামে কোনও দেশ নেই। তাই এর কোনও রাজধানীও থাকতে পারে না। ইসমাইল হানিয়া সম্প্রতি বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণ বিশেষ করে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম) শহরকে সুরক্ষা দিতেই হামাসের জন্ম। এই পবিত্র শহর নিয়ে মার্কিন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দুনিয়াজুড়ে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে তা ফিলিস্তিনি জাতির জন্য একটি বিরাট বিজয়। দুনিয়ার সব মুক্তিকামী মানুষ এ বিষয়ে আমাদের পাশে রয়েছে। মার্কিন সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভূক্তির কারণে মার্কিন অর্থ বিভাগের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেন সেই হানিয়া। এখন থেকে তিনি মার্কিনভিত্তিক কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সহায়তা পাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে তার যে কোন ধরণের সম্পত্তি, ব্যবসা বাণিজ্য ও আর্থিক লেনদেনের সুযোগ পাবেন নাতিনি।
হামাসকে নিয়ে অবশ্য ইসরায়েল-আমেরিকার বাইরে সৌদি জোটেরও অস্বস্তি রয়েছে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে হামাসকে সমর্থন দেওয়ার জন্য কাতারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। হানিয়ার পাশাপাশি মিশরের সশস্ত্র আন্দোলন গোষ্ঠী হারাকাত আল-সাবিরিন, লিওয়া আল-থাওরা, হারাকাত সাওয়ার মিশর- এ তিন সংগঠনকেও নিষিদ্ধ করে ও সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।