প্রশাসনে সিনিয়র সচিব ও সচিব পদমর্যাদায় কাজ করছেন মোট ৭৭ জন কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে সচিব পদমর্যাদায় নারী কর্মকর্তার সংখ্যা ৯ জন। তারা বলেছেন, ‘দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিশ্বাস ও যোগ্যতার মাধ্যমে আস্থা রাখতে পেরেছি বলেই সরকার আমাদের এই পদে নিয়োগ দিয়েছে। আমরা সেই আস্থা রেখেই দায়িত্ব পালন করছি।’
দেশের সচিব ও সচিব পদমর্যাদায় থাকা নারীরা হলেন নাসিমা বেগম, ড. নমিতা হালদার, আকতারী মমতাজ, জুয়েনা আজিজ, শামীমা নার্গিস, নাসরীন আকতার, হোসনে আরা বেগম, আফরোজা খান ও মাফরূহা সুলতানা।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগমের পরিচিতি নম্বর ১৬১১। প্রশাসনের শীর্ষ এই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হয়েছে বলে জানালেন তিনি। তার কথায়, ‘কোনও বিশেষ সুবিধা নয়, সরকারের সব নিয়মনীতি অনুসরণ করেই এখানে এসেছি। কর্মজীবনের শুরুতে ১৯ বছর মাঠপর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট, টিএনওসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব। তিনি বলেন, ‘শুধু প্রশাসনেই নয়, এমন কোনও খাত নেই যেখানে নারীরা দায়িত্ব পালন করছেন না। দেশের সবখানেই পুরুষের পাশাপাশি নারীরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদারের পরিচিতি নম্বর ৪৫৭০। সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব হিসেবে আছেন আকতারী মমতাজ (পরিচিতি নম্বর ২৩৫৩)। তিনি এর আগে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সচিবের পদমর্যাদায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হিসেবে আছেন জুয়েনা আজিজ। প্রশাসনে তার পরিচিতি নম্বর ৩৫৪৮। একইসঙ্গে সচিবের পদমর্যাদায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করছেন শামীমা নার্গিস (পরিচিতি নম্বর ৪৮৪১)।
সচিবের পদমর্যাদায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক পদে আছেন নাসরীন আকতার। প্রশাসনে তার পরিচিতি নম্বর ৪৮২৮।
২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি সরকারি এক আদেশ বলে সচিবের পদমর্যাদায় তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদটি দ্বিতীয় গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এই পদে এখন দায়িত্ব পালন করছেন হোসনে আরা বেগম (পরিচিতি নম্বর ২৫৬৯)।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে আছেন আফরোজা খান। তিনি এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত আমদানি-রফতানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সরকারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। এর সচিব হিসেবে আছেন মাফরূহা সুলতানা। তার কথায়, ‘সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশ ও জনগণের স্বার্থে অবদান রাখতে পারা গৌরবের।’
প্রশাসনের শীর্ষ পদে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নারীরা প্রশাসক হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সরকারের একাধিক অতিরিক্ত সচিব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘এখানে পদ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পুরুষ নাকি নারী তা বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না। প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নারীরা অবশ্যই দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা যোগ্য বলেই সরকার তাদের এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন।’