‘আমি কি এ দেশে নিষিদ্ধ?’ চরম ক্ষোভ আর অভিমান নিয়ে জানতে চাইলেন ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। কেন তার এই অভিমান আর এমন প্রশ্ন এর জবাবে তিনি বলেন, দেখুন কয়েক বছর ধরে দেখছি আমার ছবি মুক্তি পেতে গেলে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, মনে হয় যেন আমি একজন অপরাধী। এখানে আমার কাজ করার কোনো অধিকার নেই।
সাম্প্রতিক সময়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই যে দেখুন বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আমার অভিনীত ‘চালবাজ’ ছবিটি এ দেশে মুক্তি পাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ৬ এপ্রিল ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটি মহল কোনোভাবেই ছবিটি মুক্তি দিতে দিল না। এতে কি হলো, এ দেশের দর্শক বাঙালির এই প্রধান উৎসবে একটি ভালো ছবি দেখা থেকে বঞ্চিত হলো আর সিনেমাহল মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এই প্রতিবন্ধকতার কারণে ছবিটি ২০ এপ্রিল ভারত আর ২৭ এপ্রিল এ দেশে মুক্তি পেল। ২৭ এপ্রিল মুক্তি দিতে গিয়েও আমার ছবিটা নতুন করে বাধার মুখে পড়ল। ছবিটির সেন্সর শো এর দিন সেন্সর বোর্ডের সামনে গিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করল। আমি জানতে চাই কেন আমার বিরুদ্ধে এমন হবে। আমি তো এ দেশ আর দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। এ দেশের ছবিকে বিশ্বমান দিয়ে বিশ্ববাজারে নিয়ে গিয়েছি। আজ বাংলাদেশের ছবি ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বে সাড়া জাগাচ্ছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম কোনো বাংলা ছবি হিসেবে ‘নবাব’ ছবিটি মুক্তি পেয়ে অভাবনীয় সাড়া জাগিয়েছে। তারপরেও কেন আমাকে নিয়ে এই নোংরা রাজনীতি। এর কারণ কী? যারা আমার বিরুদ্ধে অযৌক্তিকভাবে এসব করছে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, দয়া করে আপনারা বলুন আমার অপরাধ কোথায়? আমার কাজ দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে এটি যদি কারও চক্ষুশূল হয়ে থাকে, যাদের হাতে কোনো কাজ নেই তারা যদি ভেবে থাকে আমাদের হাতে যখন কাজ নেই তখন শাকিব কেন কাজ করবে। তাকে আমরা প্রতিরোধ করব। এটি ভুল ধারণা আর পরিকল্পনা। আমার বিরুদ্ধে যতই ঈর্ষা করা হোক না কেন দর্শক কিন্তু আমার কাজের স্বীকৃতি বরাবরই দিয়ে যাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া আমার ‘চালবাজ’ ছবিটি এই প্রমাণ আবারও দিল। ছবিটি দেখতে সিনেমাহলে উপচে পড়া দর্শক, টিকিট নেই, কালোবাজারে উচ্চমূল্যে টিকিট বিক্রি দেখে আমি নিজেই অবাক হয়েছি। কারণ ছবিটি মুক্তির আগে এর আমদানিকারক নানা বাধার কারণে প্রচারণা চালাতে পারেনি। বলতে গেলে প্রচার প্রচারণা ছাড়াই ছবিটি মুক্তি পেয়েছে, ছবিটি দেখতে দর্শক সিনেমাহলে ছুটে গিয়েছে এবং ছবিটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছে। সিনেমাহল মালিকদের মুখেও তৃপ্তির হাসি ফুটেছে। আমার কথা হলো যারা কলকাতার ছবিতে অভিনয় আর যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা নিয়ে অনিয়মের কথা বলেন তারা কেন নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকারের কাছে গিয়ে বিষয়গুলো উত্থাপন করেন না? কলকাতার ছবিতে এ দেশের শিল্পীদের অভিনয় আর যৌথ আয়োজনের ছবি নির্মাণ তো নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতার পর থেকে হয়ে আসছে। এসব ক্ষেত্রে নিয়মনীতি যদি সময় উপযোগী করতে হয় তাহলে সম্মিলিতভাবে তা করলে চলচ্চিত্র শিল্পেরই উন্নতি হবে। তা না করে কাদা ছোড়াছুড়ি করলে দেশের সবচেয়ে বড় এই গণমাধ্যমটি ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি আবারও সরকার ও দেশ আর জাতির কাছে প্রশ্ন রাখছি- আমি এ দেশে নিষিদ্ধ কিনা? যদি নিষিদ্ধ হই তাহলে বলে দিন চলচ্চিত্র ছেড়ে চলে যাব। আমি বিভাজন আর অনৈক্য চাই না।