নিজস্ব প্রতিনিধি: কলারোয়ায় বিলুপ্তির পথে গাব গাছ ও গাব ফল। গাবের ফলের উপযোগিতা রয়েছে অনেক। মানুষের কল্যাণে এটি দারুণ কাজে আসলেও গাব ফলের কল্যাণে মানুষের কাজ যেনো থমকে গেছে।
জানা গেছে- গব ফল থেকে ট্যানি জাতীয় আঠা তৈরি করা হয়। টেকসই করতে এই আঠা মাছ ধরার জালে, পশুর চামড়ায় এবং নৌকায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিশেষ প্রক্রিয়া গাব ফলের রং দিয়ে জালের রংসহ অন্যান্য রং-এর প্রলেপ দেয়া যায়, যেটা খুবই দীর্ঘস্থায়ী।
দেশি গাবের ফল গোলাকার। খেতে হালকা মিষ্টি ও কষযুক্ত। চলতি মৌসুমে এলাকার কিছু কিছু গাছে সল্প পরিমাণে গাব দেখা গেছে। সেগুলো পাঁকতেও শুরু করেছে। সবুজ ফল পাকলে হলুদবর্ণ ধারণ করে।
এছাড়া মানুষের বহুমূত্র, ক্যান্সার, এ্যাকজেমা, চর্মরোগ, আমাশয়, মূত্ররোগে গাব একটি কার্যকর ভেষজ বলে আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য চিরঞ্জীব বনৌষধিতে গাবের বিভিন্ন ভেষজ প্রয়োগের কথা উল্লেখ রয়েছে।
পরিপক্ক একটি গাব গাছ ৩০-৩৫ মিটার লম্বা আর ৬৫-৭০ মিটার ব্যাসের হয়ে থাকে। কিন্তু জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের ফলে, বসতবাড়ি তৈরির ফলে, মনুষ্যসৃষ্টির ফলে ও অন্যান্য কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই গাব গাছ।
অনেকে জানিয়েছেন- ‘কয়েক বছর আগেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গাব গাছ দেখা যেতো। গাব গাছ নিয়ে মানুষের মাঝে রয়েছে ভীতিও। কিছু সহজসরল মানুষের ধারণা গাব গাছে নাকি ভূত-পিচাশ বাস করে। এর সত্যতা পাওয়া না গেলেও ঘন পল্লবের গাব গাছকে নিরাপদ মনে করে পেঁচার মতো প্রাণী বাস করতো। আর রাতে পেঁচাকে ভূত-পিচাশ ভেবে ভয় পেতো কেউ কেউ।’
তারা জানান- ‘কালের বিবর্তনে লোকালয়ের চাপে ঝোপ-ঝাড় ধ্বংস আর অবাধে বৃক্ষনিধনের ফলে গাব গাছ বিলীন হতে বসেছে।’
সচারচার দেখা না গেলেও উপজেলার মিরডাঙ্গা গ্রামের জনৈক আকমল হোসেনের বাড়ির পাশে দেশীয় গাব ফলের গাছ দেখা গেছে। গাব ফল দিয়ে ভেষজ ঔষধসহ নানান উপকার হয় মানুষের। কাজে লাগে তার কাঠও।
বন ও পরিবেশ অধিদফতর থেকে প্রকৃতির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ঔষধী ফলগাছ হিসেবে গাবকে গুরুত্ব দিতে সচেতন মহল দাবি করেছেন।
কলারোয়ায় বিলুপ্তির পথে গাব গাছ ও ফল
পূর্ববর্তী পোস্ট