মালয়েশিয়ায় ১৪তম সাধারণ নির্বাচনের শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের পাকাতান হারাপান জোট।
দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে।
মালয়েশিয়ার সাধারণ নির্বাচনে জয় দাবি করেছেন দেশটির ৯২ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।
বলেছেন, তার নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোটই বুধবারের এ নির্বাচনে নতুন সরকার গঠনের জন্য পার্লামেন্টে পর্যাপ্ত আসন জিতেছে।
ভোটের অনানুষ্ঠানিক ফলে বিরোধী জোটের দিকেই ভোটের পাল্লা ভারি দেখা গেছে। তবে তা ক্ষমতাসীন জোটের ৬১ বছরের নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটানোর জন্য যথেষ্ট কি-না তা এখনো পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে না।
মালয়েশিয়াকে উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়া মাহাথির মোহাম্মদ এবারের নির্বাচনে নিজ দলের বিরুদ্ধেই লড়ছেন। যে দলের হয়ে মাহাথির ২২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, সে দলেরই প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে তিনি এখন বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশন থেকে আসা ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলে দেখা যাচ্ছে, নাজিব রাজাকের ক্ষমতাসীন বারিসান ন্যাশিওনাল (বিএন) জোট এ পর্যন্ত পার্লামেন্টের ২২২ আসনের মধ্যে ৪২ টিতে জয় পেয়েছে। আর মাহাথিরের বিরোধীদলীয় জোট জিতেছে ৫২ টি আসনে।
কোনো দল বা জোট ১১২ আসনের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই শাসনক্ষমতায় আসীন হতে পারে। মাহাথির বলেছেন, তার পাকাতান হারপান জোট এ প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনে জয় পেয়েছে বলেই মনে করছে।
প্রধানমন্ত্রী রাজাকের জোটের কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের মাহাথির বলেন, “আমাদের ভোট গণনা থেকে আমরা বুঝতে পারছি তারা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। তারা সরকার গঠন করতে পারবে না বলেই মনে হচ্ছে।”
মাহাথিরের এ দাবির ব্যাপারে ক্ষমতাসীন জোট তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ভোটের কিছু ফল প্রকাশিত হয়েছে অনানুষ্ঠানিকেভাবে। সেগুলো যাচাই করা হয়নি।
কমিশনের চেয়ারম্যান মোহদ হাশিম আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, “রাজনৈতিক দলগুলো যে যার বিশ্বাসমত নির্বাচনে জয় দাবি করতেই পারে। কিন্তু… অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। আমরা যত শিগগিরই সম্ভব ভোটের ফল ঘোষণা করব।”
ভোটের ফল আসতে শুরু করেছে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই। বেশিরভাগ আসনের ভোট গণনা মধ্যরাতের আগেই শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত ফল আসতে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
মাহাথির এবারের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেছেন। ভোটগ্রহণে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেছেন তিনি।
মাহাথির বলেছেন, ভোটগ্রহণের সময় শেষের পরও অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তিনি খবর পেয়েছেন। ভোট দেওয়া থেকে ওই ভোটাররা বঞ্চিত হয়েছেন।
নির্ধারিত সময়ে ভোট শেষ হলেও ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। মাহাথির বলেছেন, ৫টা বাজার পরও অনেকে লাইনে দাঁড়ানো ছিলেন।
তবে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান বলেছেন, ৫টার পর কারো ভোট দেওয়ার অনুমতি নেই। কেউ অসন্তুষ্ট হয়ে থাকলে আদালতে যেতে পারেন।
অব্যবস্থাপনার কারণে কতজন ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তার হিসাব পাওয়া যায়নি।