খেলার খবর: আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস করার পর আর্জেন্টিনার তারকা লিওনেল মেসির সঙ্গে পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর তুলনা যেন আরও জোরেসোরে শুরু করেছেন ভক্তরা।
মেসি যখন পেনাল্টিটি নেন তখন খেলায় ১-১ গোলে সমতা চলছিল। এতে গোল পেলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যেতো, কিন্তু আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক হানেস হালডর্সন সহজেই মেসির শটটি ঠেকিয়ে দেন। পুরো খেলায় মেসি মোট ১১টি শট নেন গোল লক্ষ্য করে, কিন্তু বল জালে ঢোকেনি।
রোনালদোর সাথে এ তুলনা আরও জোর পেয়েছে, কারণ তার আগের দিনই স্পেন-পর্তুগাল খেলায় দেখা গেছে, স্পেন তুলনামূলকভাবে ভালো দল হলোও রোনালদো তিনটি গোল করে প্রায় একাই নিজের দেশকে এগিয়ে নেন।
রোনালদো ইতিমধ্যে তার দেশ পর্তুগালকে ইউরো ২০১৬-র শিরোপা জিতিয়েছেন। কিন্তু মেসির আর্জেন্টিনা এখনো বিশ্বকাপ বা লাতিন আমেরিকান কাপও জেতেনি।
পৃথিবীর বহু ফুটবল বিশ্লেষক মেসিকে ‘এ যুগের শ্রেষ্ঠ’ বা ‘সর্বকালের সেরা’ ফুটবলার ইত্যাদি নানা অভিধায় ভূষিত করেছেন। কিন্তু ক্লাব স্তরে বার্সেলোনাকে বহু সাফল্য এনে দিলেও, আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির আর্জেন্টিনা শুধু অলিম্পিক ফুটবলে স্বর্ণপদক এবং অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে।
গত ২০১৪-র বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছিল, কিন্তু তারা জার্মানির কাছে ১-০ গোলে হেরে রানার্স-আপ হয়।
রিপ্লেতে দেখা গেল, রোনালদোর শট গোলকিপারের হাত থেকে ফসকে গিয়ে গোল হয়ে যাচ্ছে, আর মেসির শট উড়ে যাচ্ছে গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে।
রোনালদো বিশ্বকাপের আগে গত ৪৪টি টুর্নামেন্ট ফ্রি-কিক থেকে গোল করতে পারেননি, কিন্তু বিশ্বকাপে ঠিকই জ্বলে উঠেছেন। লিওনেল মেসি তার ক্লাব এবং দেশের হয়ে নেওয়া গত ৬টি পেনাল্টি কিকের মধ্যে তিনটি মিস করেছেন।
ইংলিশ ফুটবল বিশ্লেষক এবং সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা রিও ফার্দিনান্দ বলেছেন, সবাই অপেক্ষা করছিল মেসি কি করে দেখার জন্য। কিন্তু বলুন তো, এবার নিয়ে কতবার আমাদের বলতে হলো যে মেসির যা করার কথা তা তিনি করতে পারেন নি?
তবে তিনি বলেন, বিশ্বকাপে আগামী ম্যাচগুলোতে নিশ্চয়ই তাকে ভালো খেলতে দেখা যাবে।
মেসি অবশ্য বলেছেন, পেনাল্টি মিস করাটা তাকে মর্মাহত করেছে। গোলটা হলে সবকিছু বদলে যেতো, আমরা এ্যাডভান্টেজ পেতাম। আমি কষ্ট পাচ্ছি, কারণ আমরা তিনটি পয়েন্ট পেলাম না। তবে আমরা দ্রুত এ আঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্ট করবো। এখন আমাদের ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচটির দিকে মন দিতে হবে।
মেসি বলেন, আইসল্যান্ড যেভাবে খেলেছে তাতে কাজটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তারা ভালোভাবেই আমাদের ঠেকাতে পেরেছে।
অন্যদিকে, রোনালদো স্পেনের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করার পর এখন তার প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত ফুটবল বিশ্লেষকরা।
রিও ফার্দিনান্দ বলেছেন, শুক্রবার রাতটা ছিল রোনালদোর। তিনি একজন মহান খেলোয়াড় হয়ে ওঠার পথে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলেছেন। বিশ্ব স্তরে তিনি যা করছেন তা অবিশ্বাস্য।
বাস্তবেই রোনালদো অনেক ম্যাচেই এটা দেখিয়েছেন যে তিনি যা করবেন সেটাই হবে শেষ কথা।
রিও ফার্দিনান্দ বলছেন, গ্রেট হয়ে ওঠার পথে রোনালদো যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন তা মেসির ওপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।
রোনালদোর এখন আন্তর্জাতিক গোলের সংখ্যা ৮৪টি – যা পৃথিবীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম স্থানে আছেন ইরানের দায়েই (১০৯টি), দ্বিতীয় স্থানে যৌথভাবে রোনালদো আর হাঙ্গেরির পুসকাস।
অনেকে এমনটাও বলছেন, রোনালদোর বয়স ৩৩ হলেও তিনি ফিটনেস এবং ট্রেনিংয়ের ব্যাপারে এতটাই যত্নবান যে হয়তো আগামী বিশ্বকাপেও তিনি খেলতে পারবেন।