তালা প্রতিনিধি: স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদার)দের সহযোগীতায় দিন দিন তালার ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর আমবাগানের জমি ভূমিগ্রাসী দখলদারদের দখলে চলে যাচ্ছে। আমবাগানের ২১বিঘা জমির প্লটের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৫বিঘা জমি বিভিন্ন মেয়াদে ইজারার মাধ্যমে দখলে নিয়েছে একাধিক ব্যক্তি। ওই সকল ব্যক্তিরা সরকারের ওই জমি দখল করে সেখানে বাড়ি-ঘর নির্মাণ সহ বসবাস শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় ইসলামকাটী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার সহযোগীতায় ভূমিগ্রাসীরা দখল কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে। এতেকরে গোপালপুর আমবাগানের ভবিষ্যৎ হুমকির মধ্যে পড়েছে! জানাগেছে, উপজেলার ইসলামকাটী ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী আম বাগানটি ৪, ৫, ৭ ও ৯ নং দাগের সরকারি ৭০০ শতক জমির মধ্যে অবস্থিত। এই পরিমাণ জমির মধ্যে ঐতিহ্যবাহী আমবাগানটি অবস্থিত। স্থানীয় দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তি জানান, আমবাগানের ৭০০ শতক জমির মধ্যে একাধিক ব্যক্তি ইতোমধ্যে ১৪৮ শতক জমি ইজারা নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেছে। এরমধ্যে আমবাগানের গুরুত্বপূর্ন ৫ নং দাগের ৪৩শতক জমির মধ্যে ৩২ শতক জমি চলে গেছে ইজারা গ্রহিতাদের কাছে। বর্তমানে এই দাগের জমি আবারও ইজারা নেবার জন্য আহাদ আলী নামের এক ব্যক্তি পায়তারা শুরু করেছে। আর তাতে সহায়তা দিচ্ছে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। এবিষয়ে স্থানীয়রা আপত্তি সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন। নায়েবের সহযোগীতায় ভূমিগ্রাসী আহাদের সরকারি জমি দখলের ঘটনায় আপত্তিকারীদের বিরুদ্ধে ভূমিগ্রাসীরা মিথ্যা মামলায় জড়ানো সহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন হুমকি প্রদান ও হয়রানীর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় এলাকাটি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, গোপালপুর সরকারি আম বাগানের ৫ নং দাগের ৪৩ শতক জমির মধ্যে ফিরোজা বেগম ১২ শতক, লাইলা বেগম ৮ শতক, মনিরুল ও মিনারুল ৫ শতক এবং আব্দুর রউফ খাঁ ৬ শতক জমি ইতোমধ্যে ইজারা গ্রহণ করে। আর ১১ শতক জমি সহ মোট ৫১৬ শতক জমির দখল রোধে ইতোমধ্যে চারিপাশে কাটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছে। কিন্তু ৫ নং দাগের ইজারা নেয়া ৩১ শতক জমি ছাড়াও আবারও ৩ শতক জমি ইজারা নেবার জন্য জনৈক আহাদ আলী তৎপরতা চালাচ্ছে। আর এ কাজে সহযোগীতা করছে ইসলামকাটী তহশীলদার। কিন্তু এই জমি ইজারা দেয়া হলে আম বাগানের জমি সহ ঐতিহ্যবাহী আম বাগানটির ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। উল্লেখ্য, তালা উপজেলার মানুষের বিনোদেন জন্য ভাল কোন স্পট না থাকায় এই আমবাগানটিকে কেন্দ্র করে একটি পিকনিক স্পট বা বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য তালাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। গোপালপুর ও ঘোনা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, ঘোনা গ্রামের এনায়েত খাঁ এর পুত্র আহাদ আলী খাঁ ইতোপূর্বে আমবাগানের ৫ নং দাগের জমি দখল নিয়ে সেখানে বসতঘর নির্মান করে। পরে সেই জমি সহ ঘরটি লাইলা বেগমের নিকট বিক্রয় করে দেয়। পরে ২০১১ সালের বন্যায় আহাদ আলী উক্ত জমিতে কৌশলে আবারও বসবাস শুরু করে। বর্তমানে সে ওই জমিতে বসত ঘর তৈরি সহ ৮ শতক জমি ইজারা গ্রহন পূর্বক দখল করার চেষ্টা করছে। তার এই অপকর্মে বাঁধা দেওয়ায় সে এলাকার নিরিহ মানুষদের নামে মিথ্যা জিডি সহ অপপ্রচার চালিয়ে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। এসব ঘটনায় এলাকাবাসী সহ সচেতন মহল অবিলম্বে ঐতিহ্যবাহী আমবাগানের অস্তিত্ব রক্ষায় ডিসিআর বা ইজারা প্রদান বন্ধ করে আমবাগানের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট