বিদেশের খবর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর নিজ দেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে দুই ঘণ্টা একান্তে বৈঠক করেন দুই নেতা। এরপর তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি রাশিয়া। তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করেন ট্রাম্প।
নিজ দেশের গোয়েন্দাদের তথ্যের বিরুদ্ধে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই রাশিয়ার।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান দলের স্পিকার পল রায়ান বলেন, ‘ট্রাম্পকে বুঝতে হবে রাশিয়া আমাদের মিত্র নয়।’
রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন বলেন, ‘এটা মার্কিন প্রেসিডেন্টের লজ্জাজনক পারফরম্যান্স।’
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, নির্বাচনে হস্তক্ষেপের ব্যাপারে তিনি নিজ দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ওপর, নাকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর আস্থা রাখেন। ট্রাম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, রাশিয়া (হস্তক্ষেপ) করেনি। আমি তো কারণ দেখি না, এটা কেন হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, আগের মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের জন্য দায়ী।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে বছরই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানায়, নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিপক্ষে তৎপরতা চালিয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি সে ঘটনা তদন্তে নিয়োজিত বিশেষ কাউন্সেলর রবার্ট মুলারের প্রতিবেদনে রাশিয়ার ১২ চরকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পল রায়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নৈতিক মানদণ্ড সমান নয়। মৌলিক মূল্যবোধ ও আদর্শগত দিক থেকে এ সম্পর্ক শত্রুভাবাপন্ন।’ তিনি বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ম্যাককেইন বলেন, ‘এর আগের কোনো প্রেসিডেন্ট নিজেকে এ রকম একজন স্বেচ্ছাচারী নেতার সামনে শোচনীয়ভাবে অপদস্থ করেননি।’
রিপাবলিকান দলের আরেক সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ‘২০১৬ সালে হস্তক্ষেপের ঘটনায় রাশিয়াকে জোরালোভাবে জবাবদিহি করার সুযোগ হারালাম আমরা।’
মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক ড্যান কোটস বলেন, গোয়েন্দা মহলের কাছে এটা স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল করতে কাজ করছে রাশিয়া। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের বক্তব্য কেবল বোকার মতোই নয়, তিনি পুরোপুরি পুতিনের পকেটে চলে গেছেন। রিপাবলিকান দেশপ্রেমিকরা, আপনারা কোথায়?’
এদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বৈঠকের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্পের প্রশংসা করেন।