বিনোদন ডেস্ক: সবাইকে সব কিছু জানতেই হবে, এমন কোনও মানে নেই। সারা পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান একা কোনও মানুষের পক্ষে অর্জন করা অসম্ভব। কিন্তু তাই বলে কোনও বিষয় সম্পর্কে ভালভাবে না জেনে দুমদাম মন্তব্য করাটা তো আর কাজের কাজ নয়! যদিও ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের অধিকার প্রত্যেক মানুষেরই রয়েছে, কিন্তু সে মতামত চূড়ান্ত হাস্যকর প্রতিপন্ন হলে প্রকাশ্যে খিল্লি হওয়া কে আটকায়!
বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে নিজের অজ্ঞানতার প্রমাণ দিয়ে টুইটারে প্রবলভাবে হাসির খোরাক হলেন শিল্পা শেট্টি। সম্প্রতি একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত আর্টিকলে শিল্পা লেখেন যে, জর্জ অরওয়েল-এর লেখা বিখ্যাত রাজনৈতিক উপন্যাস ‘অ্যানিমাল ফার্ম’ শিশুদের পাঠ্য হওয়া উচিত কারণ এই বই পড়ে অন্যান্য জীবজন্তুর প্রতি শিশুদের স্নেহ-ভালবাসা বাড়বে।
১৯৪৫ সালে লেখা অরওয়েলের এই উপন্যাসটি বস্তুত পূর্বতন সোভিয়েত রাশিয়ায় স্তালিন জমানার একটি তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গাত্মক সমালোচনা। যেহেতু এখানে মূল চরিত্র দু’টি শূকরছানা, শিল্পা বোধহয় তাই ভেবে বসেছেন যে এটি বাচ্চাদের বই। পৃথিবীতে তিন ধরনের বই-পড়িয়ে রয়েছেন— একদল যাঁরা মন দিয়ে পুরো বইটি পড়েন, দ্বিতীয় দল যাঁরা বইয়ের কয়েকটি পাতা পড়ে বাকিটা আপন মনের মাধুরী মিশায়ে কল্পনা করে নেন এবং তৃতীয় দল, যাঁরা বইয়ের ব্যাককভারে লেখা সিনপসিস পড়ে ও এদিক-ওদিক থেকে বই সংক্রান্ত আর্টিকল-সমালোচনা পড়ে বইবোদ্ধা হয়ে ওঠেন।
শিল্পা রয়েছেন দ্বিতীয় দলে এবং সেটাই সবচেয়ে ভয়ানক ওঁর পক্ষে তো বটেই এবং ওঁর সন্তানসন্ততি ও কাছের মানুষের পক্ষেও যাঁরা ওঁর কাছ থেকেই জীবনের নানা দিক সম্পর্কে শিক্ষিত হন। নিজের অশিক্ষা তিনি এইভাবে তাঁর কাছের মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। শিল্পার এই বিখ্যাত উক্তি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই টুইটারে ‘শিল্পা শেট্টি রিভিউজ’ নামে একটি হ্যাশট্যাগ তৈরি হয়েছে। এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে বিশ্বসাহিত্যের বহু নামকরা উপন্যাস সম্পর্কে শিল্পার সম্ভাব্য মন্তব্য পোস্ট করছেন বহু মানুষ। নীচে রইল তার কিছু নমুনা।
এই গোটা বিষয়টি শিল্পার নজরে না পড়ুক, তাঁর কানে নিশ্চয়ই গিয়েছে। তাঁর চক্ষুলজ্জা থাকলে তিনি তাঁর অজ্ঞানতার কথা স্বীকার করে অন্তত একটা টুইট করতেন। কিন্তু বাবা রামদেবের সাক্ষাৎ শিষ্যা শিল্পা সেসবের ধার ধারেন না এবং তাই টুইটার কমিউনিটির ব্যঙ্গবিদ্রুপের হাত থেকেও তাঁর নিস্তার নেই।