বিদেশের খবর: পাকিস্তানের নির্বাচন ক্রমশই ঐতিহাসিক হয়ে উঠছে। যেখানে দাপিয়ে প্রচার চালাচ্ছে জঙ্গি নেতা হাফিজ সাঈদ। অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে নওয়াজ শরিফ। চিত্রটা মারাত্মক ভারসাম্যহীন বলে মনে করা হচ্ছে।
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার সুপ্রিমো হাফিজকে ভোটে দাড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। বিতর্ককে পিছনে ফেলেই হাফিজ দর্পের সঙ্গে তার নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল মিল্লি মুসলিম লীগের সমর্থনে ভোট প্রচার করছে।
এদিকে সোমবার দুর্নীতির রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে পালটা মামলা দায়ের করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
পাকিস্তানের ভোটের চিত্রটা বিশ্ববাসীকে কী বার্তা দিচ্ছে তা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। কারণ, নওয়াজের পিএমএল-এন দলের আইনি স্বীকৃতিকে অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। অথচ জাতিসংঘের তোয়াক্কা না করে আল্লাহ-উ-আকবর তেহরিকের হয়ে নিজের প্রার্থী দিয়েছে সাঈদ। রয়েছে সাঈদের জামাই ও ১৩ নারী প্রার্থী। ১৪ প্রার্থীর প্রত্যেকেই জামাত উদ দাওয়ার ২৬৫ সদস্যের অন্তর্ভূক্ত।
হাফিজ সাঈদ, ভারতে মুম্বাই হামলার মূলচক্রী। জঙ্গি সংগঠন জামাত উদ দাওয়ার প্রধান নেতা। জাতিসংঘের ঘোষিত আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেতা হাফিজ, যার মাথার মূল্য ১০মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই জঙ্গি নেতা পাকিস্তান প্রশাসনকে পাশে পেয়েই প্রচার চালাচ্ছে, প্রকাশ্যে জনসভা করছে। সেই জনসভায় হাফিজের অকপট ভাষণ সন্ত্রাসবাদের পক্ষেই।
জাতিসংঘের চোখ রাঙানিকে তোয়াক্কা না করে পাকিস্তান নিজের মহিমায়। কয়েকদিন আগেই FATF-এর কালো তালিকায় যায় পাকিস্তান। সন্ত্রাসে মদত ও আর্থিক কারচুপির অভিযোগ ওঠে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। তাতেও পরিস্থিতি সেই তিমিরেই। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আবারও গারদে, জঙ্গি নেতা সাঈদ মুক্ত আকাশে প্রচারের ধ্বজা ওড়াচ্ছে।
আন্তর্জাতিক পরিসরে বিতর্কের ঝড়, সন্ত্রাসবাদী সংগঠন যে দেশের নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে, সেই দেশকে আটকাতে কেন তৎপর নয় জাতিসংঘ। নওয়াজ, ইমরান প্রত্যেকেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সন্ত্রাসমুক্ত পাকিস্তানের দাবি রেখে হাফিজকে ভোটে দাঁড়ানোর ছাড়পত্র কেন দিল নির্বাচন কমিশন? উঠছে সেই প্রশ্ন। পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে দফায় দফায় হামলার মুখে পড়ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা।
পিএমএল-এন, এএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রচারে যেতে ভয় পাচ্ছেন। অথচ নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনিতে নির্বিঘ্নে প্রচার সারছে জঙ্গি নেতা হাফিজ সাঈদ৷ প্রচার সভায় পাকিস্তানে নবজাগরণ আনার আশ্বাস দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি পাকিস্তানে ভোট বাতিলের দাবি উঠছে। অবশ্য, গোটা বিষয়ে মুখে কুলুপ পাকিস্তান প্রশাসনের।