‘ওরা আমাদের ধর্ষণ করত। যতক্ষণ না আমরা অজ্ঞান না হয়ে পড়তাম, ততক্ষণ পর্যন্ত চলত এসব কাজ।’ ইরাকের উত্তরাঞ্চলের দুই নারী লামিয়া আজি বাশার ও নাদিয়া মুরাদ এভাবেই নিজেদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানান।
২০১৪ সালের আগস্টে লামিয়া ও নাদিয়াকে ইরাকের সিনজার এলাকা থেকে অপহরণ করে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যরা। এর পর থেকে উভয়ে ছিল আইএসের যৌনদাসী। অপহরণের তিন মাস পর নাদিয়া পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। অন্যদিকে চারবার চেষ্টার পর গত মার্চে আইএসের কবল থেকে পালাতে সক্ষম হয় লামিয়া।
লামিয়া ও নাদিয়াকে সম্মানে ভূষিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংস্থার পক্ষ থেকে স্ট্রাসবুর্গে মানবাধিকার পুরস্কার ‘শাখারভ’ তুলে দেওয়া হয়। মেইল অনলাইন জানিয়েছে, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন লামিয়া ও নাদিয়া। লামিয়ার বয়স এখন ১৮ ও নাদিয়ার বয়স ২৩।
মেইল অনলাইনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হাজার হাজার নারীকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছে আইএস। এর মধ্যে ওই দুজন প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পেরেছেন।
লামিয়া মাইন বিস্ফোরণে আহত হন। আইএসের যোদ্ধারা জোর করে তাঁকে মাইন বিস্ফোরণের কাজে পাঠায়। আহত হওয়ার পর থেকে লামিয়া এক চোখে দেখতে পান না। লামিয়ার সঙ্গে ছিল আট বছর বয়সী আলমাস ও ২০ বছর বয়সী ক্যাথেরিন। উভয়ই মাইন বিস্ফোরণে মারা যায়।
লামিয়া বলেন, ‘আমি চলে আসতে পেরেছি। আল্লাহকে ধন্যবাদ। আমার দুই চোখ চলে গেলেও সমস্যা নেই। কারণ আমি ওদের থেকে পালিয়ে আসতে পেরেছি।’
নাদিয়া জানান, দিনের বিভিন্ন সময়ে অগণিত পুরুষ তাঁকে ধর্ষণ করেছে। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ নারী ও মেয়েদের ধ্বংস করে দেয়। একই সঙ্গে নিশ্চিত করে দেয়, ওই মেয়ে আর কখনোই স্বাভাবিক হতে পারবে না। আইএস ইয়াজিদি নারীদের কেবল পাচার করার মাংসে পরিণত করেছে।’
নাদিয়া ও লামিয়া বিষয়টিকে যুদ্ধাপরাধ বলে এর বিচার চেয়েছেন।