অনলাইন ডেস্ক: অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রোধ করার জন্য অনেক নারী জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করেন। মুখে খাওয়া হয় বলে এর ব্যবহার বিধি বেশ সহজ। এসব পিল বাজারজাতকরণকারী কোম্পানিগুলো মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিনিয়তই সৃষ্টিশীল সব বিজ্ঞাপন তৈরি করে চলেছে। কিন্তু এই ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিলের যে মারাত্মক সব ক্ষতিকর দিক রয়েছে সেগুলো বেশ কৌশলেই এড়িয়ে যায় কোম্পানিগুলো।
দীর্ঘদিন এসব পিল ব্যবহারে অভ্যস্ত নারী মাত্রই দেখতে পান তাদের শরীর আগের চেয়ে মুটিয়ে যাচ্ছে। শরীরের মেদ বাড়িয়ে শরীরকে ভারী ও অসাড় করে তোলে এই পিল। গবেষকরা অবশ্য পিল খাওয়ার জন্য ওজন বাড়ার সরাসরি কোনো প্রমাণ নাকি খুঁজে পাননি। তবে তারা দেখতে পেয়েছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে বদলে যেতে পারে নারীদের শরীরের গঠন। তাদের মতে, শরীরের চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং পেশির কম বৃদ্ধির কারণেই বদলে যায় শরীরের গঠন।
ওয়েসট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন নামক হরমোন থেকে তৈরি হয় জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং গবেষণা সহকারী মারিয়া গ্যালো বলেন, সব ওষুধেরই একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। সব মানুষের ক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়া এক রকম হয় না। এমনকি টিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ ওষুধেরও অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের কারণে নারীদের শরীরের গঠন পরিবর্তন হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মারিয়া গ্যালো বলেন, এর পেছনে তিনটি বড় কারণ রয়েছে। পিলের কারণে নারীদের পেশি, ফ্লুইড ধারণ এবং চর্বির ওপর প্রভাব পড়ে। যেসব নারী নিয়মিত পিলের ওপর নির্ভরশীল অন্যদের থেকে তুলনামূলকভাবে তাদের পেশি শতকরা ৪০ ভাগ কম বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে তাদের রক্তে খুবই কম মাত্রার ডিএইচইএ থাকে।
গবেষণায় যুক্ত অধ্যাপক রেইচম্যান বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল ব্যবহারের কারণে শরীরে বিশেষ এক ধরনের হরমোন বেড়ে যায়। আর এই হরমোনের প্রভাবে স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে কম মাত্রায় বৃদ্ধি পায় পেশি। অন্যদিকে ঠিকই বাড়তে থাকে শরীরের চর্বি। পিল গ্রহণ না করা নারীদের তুলনায় পিল গ্রহণকারী নারীদের শরীরে পেশি এবং চর্বির মধ্যে তারতম্য দেখা দেয়। এর ফলে স্বাভাবিক নারীদের তুলনায় তাদের শরীরের গঠনে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে এই পার্থক্য দুই এক মাসে ধরা পড়ে না। দীর্ঘ কয়েক বছরের শরীরের গঠন পর্যালোচনা করলে তা স্পষ্ট হয়।-বিবিসি