অনলাইন ডেস্ক: কিশোরদের ক্ষেত্রে গাঁজা সেবন তাদের মস্তিষ্কের বিকাশমান গঠনকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এমনটি দাবি করছে একটি কানাডিয়ান গবেষণা। গবেষণাটিতে দেখা গেছে, অ্যালকোহল পানকারীদের চাইতে গাঁজাসেবী কিশোরদের চিন্তা করার ক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি এবং আচরণে অনেক বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এই গবেষণায় ৪ বছর যাবত ১৩ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৮শো কিশোরদের ওপর বিভিন্ন পরীক্ষা চালানো হয় এবং তাদের ওপর লক্ষ্য রাখা হয়।
কানাডার ৩১টি ভিন্ন ভিন্ন স্কুলের কিশোর বয়সীদের এক বছরের অ্যালকোহল পান এবং মাদক সেবনের অভ্যাসের বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করা হয়। কম্পিউটার ভিত্তিক কগনেটিভ টেস্টের মাধ্যমে তাদের মস্তিষ্কের দক্ষতা প্রতি বছর স্কুলে পরীক্ষা করা হয়। যদিও গবেষণায় অ্যালকোহল বা মদের ব্যবহারের তুলনায় গাঁজা ব্যবহারের মাত্রা কম ছিল, তবুও ২৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরী এই ব্যবহারের সাথে অভ্যস্ত ছিল। এই তুলনাটি ছিল অন্তত ৭৫ শতাংশ কিশোর বয়সীদের সাথে যারা মাঝে মধ্যেই মদ্যপান করে থাকে।
মন্ট্রিয়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর প্যাট্রিসিয়া জে কোনরড এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। তিনি শুরুতে ভেবেছিলেন যে, কৈশোরে মস্তিষ্কে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে অ্যালকোহল। কিন্তু তার পরিবর্তে গবেষণায় দেখা গেল যে, সেই সব কিশোর-কিশোরীদের কগনেটিভ টেস্ট বা জ্ঞানীয় পরীক্ষায় ত্রুটির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে যারা কিনা গাঁজা সেবন করে, এমনকি এই মাদকটি ছেড়ে দেবার পরেও প্রভাব থেকেই যায়। এই প্রভাব থেকে যায় তাদের স্মৃতি শক্তি, যুক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে।
বিশ্বের কয়েকটি দেশ গাঁজা বৈধ ঘোষণা করলেও, চিকিৎসকরা এখনো এর ব্যবহার নিয়ে সবাই একমত হতে পারেননি। অ্যালকোহল পান করা এবং মাদক গ্রহণ করা বিশেষ করে গাঁজার মতো মাদক, এই অল্প বয়সীদের জন্য তা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন সমস্যার কারণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে কোনো কিছু শেখা, মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো জ্ঞানগত ক্ষমতা তাদের সমস্যা তৈরি হয় আর তার প্রভাব পড়ে স্কুলের পড়ালেখায়।-বিবিসি।