অনলাইন ডেস্ক: ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে এবং তাদের বিচার দাবিতে একসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ৫৬ শিক্ষক।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ পত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. তৌহিদুল ইসলামের কাছে জমা দেওয়া হয়।
৫৬ শিক্ষকের মধ্যে দু’জন রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, চারজন ডিন, চারজন প্রভোস্ট ও ১৪ জন বিভাগীয় চেয়ারম্যান রয়েছেন।
জানা যায়, শনিবার দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। এ পরীক্ষায় ঈশিতা বিশ্বাস নামে এক ছাত্রী উত্তীর্ণ হতে পারেননি। জিপিএ-৪ এর মধ্যে তিনি পেয়েছেন ১.৯৮। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সর্বনিম্ন পাস নম্বর জিপিএ- ২.২৫। এদিকে, রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ছিল কোয়ান্টাম মেকানিক্স-১ পরীক্ষা। কিন্তু ওই ছাত্রী পদার্থে উত্তীর্ণ না হওয়ায় বিভাগ তাকে কোয়ান্টাম মেকানিক্স-১ পরীক্ষার অনুমতি দেয়নি। কিন্তু পরীক্ষার একদিন আগে ফলাফল ঘোষণাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ বিরোধী উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার তার সহযোগীদের নিয়ে ঈশিতাকে জোর করে পরীক্ষার সিটে বসিয়ে দেন। বিভাগের শিক্ষকরা এতে বাধা দিতে গেলে সজীব পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনিরুজ্জামান, শিক্ষক ড. আনোয়ার হোসেন ও মহিউদ্দিন তাসনিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারধর করতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঈশিতাকে পাহারা দিয়ে সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ করান।
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভাইস চ্যান্সেলর অফিস থেকে বৈঠক করে জানান, অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের ব্যাপারে শিক্ষকরা তাদের আশ্বস্ত করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে, বিচার না পেয়ে রাতেই সব শিক্ষক একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মুহাম্মদ শাহীন উদ্দিন বলেন, আমরা সঠিক বিচার না পাওয়ায় পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি। আমরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের ড. মো. আলাউদ্দিন জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।