দেশের খবর: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তারেক রহমানসহ ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করা হবে।
বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর সচিবালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, হামলার হোতা তারেকের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।
মামলার বিচার শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রায়ের কাগজপত্র পাওয়ার পরে আমরা চিন্তা-ভাবনা করব যে এই রায়ে তারেক রহমানকে এবং আরও দুজন- কায়কোবাদ এবং হারিছ চৌধুরীকে যে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে সেটার জন্য আমরা উচ্চতর আদালতে গিয়ে তাদের ফাঁসির জন্য আমরা…এনহান্সমেন্ট বলে সেটা আইনে…এনহান্সমেন্টের জন্য আমরা আপিল করব।
তিনি বলেন, এই হামলার মূল নায়ক তারেক রহমান। তিনি আওয়ামী লীগকে ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সপাটে শেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্রের নায়ক ছিলেন। মূল হোতা তারেকের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল।
ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই মামলার রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে তখন জজ মিয়া নাটকের ব্যাপারটি উদ্ঘাটিত হলে আবার তদন্ত করা হয়। সুষ্ঠ তদন্তের পর যারা যারা এ মামলায় ষড়যন্ত্রে হত্যার কাজে এবং আলামত গুম করার জন্য দায়ী তাদেরকে বিচারে সোপর্দ করা হয়।
পলাতক ১৮ আসামিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি জানান।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে (অভিযোগপত্র) বলা হয়েছে, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশসহ (হুজি) তিনটি জঙ্গি সংগঠন ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংস ও বর্বরোচিত ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। হামলায় আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী। আর অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি এ মামলায় সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে রাষ্ট্রপক্ষ। মোট ৪৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
আর আসামি পক্ষে ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলায় ১৪৪টি আলামত ও ৫৫টি বস্তু প্রদর্শন করা হয়েছে। গত বছরের ৩০ মে এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শেষ হয়। আর গত বছরের ১২ জুন মামলায় ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি শেষ হয়।