দেশের খবর: বাংলাদেশে ব্যবহার করা ৪১ ভাগ পানিতে ই. কোলাই ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ কারণে ডায়েরিয়া, জন্ডিস ও কলেরাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানী সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশে পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যবিধি ও দারিদ্র্য সংক্রান্ত’ বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর শিরিন ঝুমা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুখসানা কাদের উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পাইপলাইনে সরবরাহ করা পানি, পুকুরের পানি, কুয়া ও টিউবওয়েলসহ সব ধরনের পানিতে এই ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এ কারণে নানা রোগ হচ্ছে।
এছাড়াও বাংলাদেশের পানিতে আর্সেনিক ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পানিতে ই. কোলাই ব্যাক্টেরিয়া থাকায় এবং স্যানিটেশন সমস্যার কারণে এক-পঞ্চমাংশ দরিদ্র মানুষ পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। দরিদ্র, উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, শহর ও গ্রামের সবাই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে শহরের বস্তিতে বাস করা লোকজন আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যায় বেশি।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এখন ৯৮ শতাংশ মানুষের কাছে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রধান সমস্যা হলো সবার কাছে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, সেটি সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানানো হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশের পাঁচ কোটি মানুষ টয়লেট শেয়ার করেন। অর্থাৎ একাধিক পরিবারের লোকজন একটি টয়লেট ব্যবহার করেন। এ সংখ্যা গ্রামে যেমন রয়েছে, তেমনি শহরেও রয়েছে। তবে শহরের বস্তি এলাকায় টয়লেট শেয়ারের সংখ্যা গ্রাম এলাকার লোকজনের তুলনায় তিনগুণ বেশি। ফলে এসব লোকজন নানা প্রকার রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশে ভূগর্ভস্থ পানির ১৩ শতাংশে আর্সেনিক রয়েছে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে এ আর্সেনিকের সংখ্যা বেশি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পানিতে আর্সেনিকের সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাদেশে দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। তাই দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি জরুরি নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে বলেও জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর শিরিন ঝুমা বলেন, স্যানিটেশন ও পানিজনিত সমস্যার কারণে বাংলাদেশের অনেক শিশু যথাযথভাবে বিকশিত হচ্ছে না। পাঁচ বছর বয়সের নিচের শিশুরা সবচেয়ে বেশি পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এ জন্য বিশ্বব্যাংক সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত।