কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটার ইছামতি নদীতে দীর্ঘ ৩ বছর জাল টেনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে ছকিনা খাতুন (৫০)। ছকিনা দেবহাটা উপজেলার দক্ষিন নাংলা গ্রামের মৃত আকবর আলীর স্ত্রী। ছকিনা তার ছোটবেলা থেকে নদীতে মাছ ধরেই তার জীবন অতিবাহিত করছে। এই মাছ ধরেই চলে তার সংসার। এমনকি এই আয় দিয়েই তার একমাত্র ছেলেটার লেখাপড়ার খরচ সহ সার্বিক ব্যয় নির্বাহ করছে। ছকিনা খাতুন জানান, তিনি অত্যন্ত গরীব পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। অভাবের সংসারে বাবা মায়ের সংসারে অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারনে বেশীদুর পড়াশুনা করা সম্ভব হয়নি। যার কারনে তিনি নদীতে জাল টেনে রেনু পোনা ধরা শুরু করেন। তিনি জানান, রেনু পোনা ধরে তিনি দিনে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা আয় করেন। ঐ রেনু পোনাগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে বিভিন্ন মৎস্য ঘেরে বিক্রয় করেন। সেখান থেকেই তার নদীর সাথেই জীবনের সম্পর্ক হয়ে যায়। পরে তার পিতা মাতা আকবর আলীর সাথে তার বিবাহ দেন। তার বৈবাহিত জীবনে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু তিনি জাল টেনে মাছ ধরা বন্ধ করেননি। কয়েক বছর পরে তার স্বামী মারা যান। আবারো তার জীবনে দূর্বীসহ অবস্থা নেমে আসে। সংসারের খরচ ও আর ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু নদীতে মাছ ধরেই তার কোনরকমে সংসারটি চলতে থাকে। জীবনের প্রয়োজনে তিনি আর পিছু ফিরে তাকাননি। নদীর সাথের তার জীবনের গভীর সম্পর্ক হয়ে যায়। তিনি ভোর বেলা থেকে দুপুর পর্যন্ত আর কোন কোন সময় দুপুরবেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে জাল টেনে মাছ ধরেন। ছকিনা জানান, শুধু তিনিই নন, এই নদীতে মাছ ধরে তার এলাকার এবং আশেপাশের এলাকার অনেক মহিলা ও পুরুষ এই ইছামতি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর এই নদীর সাথের মিশে আছে তাদের ভাল মন্দ, সংসার ও দৈনন্দিন কাজ কর্ম। সারাদিন ক্লান্তি হলেও বেচে থাকার আশায় ও ভবিষ্যত জীবনের চিন্তাই চলে ছকিনা সহ তাদের মতো মানুষদের জীবন।
জীবিকার তাগিদে দেবহাটার ইছামতি নদীতে ৩৯ বছর মাছ ধরছেন ছকিনা
পূর্ববর্তী পোস্ট