দেশের খবর: আর মাত্র কয়েকমাস পরেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, এ নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে চলছে নানারকম আলোচনা। বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ ঠিক রেখে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা নাও হতে পারে। বরং মন্ত্রিসভায় নতুন করে দুই-একজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
গত সোমবার বিকালে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট করা হলে উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আর তাছাড়া বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলের মন্ত্রী আছে।
মন্ত্রীসভা ছোট করে নির্বাচনকালীন সরকার এবার কখন হবে এবং তার ধরন কেমন হবে? দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোট না করলে কোনো অসুবিধা আছে কি না?
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের মত যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, কোথাও নির্বাচনের সময় মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আনা হয় না। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা কেন পুনর্গঠন করা হয়েছিল, সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে শেখ হাসিনা বলেন, সে সময় বিরোধী দলে থাকা বিএনপি নির্বাচনে আসতে রাজি হচ্ছিল না বলে তখন তাদের নির্বাচনকালীন সরকারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যে মন্ত্রণালয় চায়, সেই মন্ত্রণালয় দেয়া হবে বলেছিলাম। তারা যখন আসেনি, তখন বিভিন্ন দলগুলো নিয়ে ছোট মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা (দশম সংসদ নির্বাচনে) মেজরিটি পাওয়া স্বত্ত্বেও প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো থেকে মন্ত্রিসভা গঠন করেছি। এই মন্ত্রিসভায় জনগণের প্রতিনিধি যারা, তারা আছেন। যেহেতু সব দলের প্রতিনিধি আছে, জানি না এটাকে ছোট করার দরকার আছে কিনা। কাটছাঁট করা হবে কিনা। মন্ত্রিসভা ছোট করা হলে একজনকে কয়েকটা মন্ত্রণালয় চালাতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনো কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দুই তিন মাসের জন্য থমকে যেতে পারে। এ বিষয়গুলোও ভাবতে হবে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ ঠিক রেখে নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে থেকে দুই একজনকে নতুন করে মন্ত্রী পরিষদে যোগ করা হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেভাবে মন্ত্রীসভা ঠিক থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশেও তাই হবে। আগামী ২৬ তারিখ মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সেদিন সন্ধা ৬টায় দলীয় ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঐদিন পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের এ্যাডভাইজারি কমিটি ও সংসদীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেদিনই মন্ত্রিপরিষদের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, তবে এটা পরিস্কার যে মন্ত্রিপরিষদ ছোট হওয়া সম্ভাবনা নেই। গেলবার ভিন্ন প্রেক্ষাপট ছিল। সেবার বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। ফলে প্রধানমন্ত্রী নিজের থেকে মন্ত্রিপরিষদ ছোট করে নির্বাচন করেছেন। এবার পেক্ষাপট ভিন্ন তাই মন্ত্রিপরিষদ ছোট হওয়ার দরকার নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন দুই একজন মন্ত্রী অপজিশন থেকে নেওয়া হতে পারে। বিষয়টি নেত্রী চুড়ান্ত করবেন।