অনলাইন ডেস্ক: মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের খাবার নিয়ে একটা ভুল ধারণা আছে। যেমন, লবণ ক্ষতিকর, নুডলস মোটা করে অথবা ডিম কোলোস্টরেলের মাত্রা বাড়ায় কিংবা স্যাকারিন চিনি চেয়ে ভালো। এরকম বেশ কিছু ভুল ধারণা অনেকেরই রয়েছে৷ কিন্তু এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন।
জেনে নিন একপলকে-
লবণের ভালো-মন্দ: অনেকের ধারণা অতিরিক্ত লবণ খেলে স্ট্রোক করে এবং কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ে, তা সত্যি। তবে এ কথা ভেবে অনেকেই খাবারে লবণের পরিমাণ একদম কমিয়ে দেন, যা ঠিক নয়। কারণ, শরীরে লবণের পরিমাণ কম হলে স্ট্রেস হরমোন উৎপাদন বেড়ে যায়। তাছাড়া লবণ নার্ভ সিস্টেমকে ঠিক রাখতে সিমপ্যাথেটিক নার্ভ সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। মানুষের পেশির ব্যথা প্রতিরোধে লবণের যেমন ভূমিকা রয়েছে, তেমনি লো ব্লাড প্রেশারের ক্ষেত্রেও লবণ উপকার অনেক।
নুডলস কি কতটা মোটা করে: অনেকের ধারণা নুডলস মোটা করে। আসলে এটা নির্ভর করে আপনি কোন আটার তৈরি নুডলস খাচ্ছেন, তার ওপর। সাধরণত, সাদা আটা বা ময়দা যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা আজকাল স্বাস্থ্যসচেতন প্রায় সকলেই জানেন৷ আপনি যদি শস্যদানা থেকে করা আটার তৈরি নুডলস খান, তাহলে অবশ্য ভিন্ন কথা। মূলকথা হচ্ছে, সব নুডলস এক নয়! নুডলসের স্বাদ পেতে নুডলসের ‘আটার’ দিকে লক্ষ্য রাখুন।
ডিম কতটা কোলোস্টরেল বাড়ায়: আমরা ধারণা করি ডিম খেলে প্রতিটি মানুষেরই যে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাবে, তা ভাবা একেবারেই ঠিক নয়। এবিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৫০,০০০ মানুষকে নিয়ে করা এক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, হৃদপিণ্ডে ডিম খাওয়ার নেতিবাচক কোন প্রভাব পড়েনি, বরং তাঁদের শতকরা ১২ ভাগ স্ট্রোকের ঝুঁকি কমেছে। তবে এটা ঠিক ডিমের পুরোপুরি পুষ্টিগুণ থাকে কেবলমাত্র ‘অর্গানিক’ ডিমে।
স্যাকারিন স্বাদ কেড়ে নেয়: আপনি যদি ক্যালোরির হিসাব করেন, তাহলে অবশ্যই স্যাকারিন ভালো। কিন্তু স্যাকারিন মানুষের খিদে বাড়ায়। তাছাড়া যাঁরা নিয়মিত স্যাকারিন খান, তাঁরা চিনির আসল স্বাদ প্রায় ভুলেই যান। এ বিষয়ে আনে ফ্লেক জানান, সাধারণ একটা আপেল খেতে কত স্বাদ সেটাই তারা ভুলে যান নিয়মিত ‘স্যাকারিন’ খাওয়ার কারণে।
চর্বি খেলে কি আসলে চর্বি বাড়ে: আমরা জানি চর্বি খেলে চর্বি বাড়ে। আসলে এটা ঠিক তার উল্টো। সুস্থ থাকার জন্য প্রতিটি মানুষের শরীরে প্রয়োজন উঁচুমানের তেল। বিশেষ করে স্যামন মাছের চর্বি বা তেল কার্ডিওভাসকুলারের ঝুঁকি কমায়, যা গবেষণায় বিশেষ ভাবে প্রমাণিত। তাছাড়া এতে রয়েছে বিভিন্ন বাদামের তেল, যা শরীরে ভিটামিন ‘ই’র জোগান দেয়।
লাল মাংস কি স্বাস্থ্যে জন্য ক্ষতিকর: সাধারণত, মাংসে রয়েছে উঁচুমানের প্রোটিন এবং ভিটামিন বি ১২, যা সকলেরই প্রয়োজন। আর এই প্রোটিন কোন উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায় না। শোনা যায়, মুরগির মাংস নাকি লাল মাংসের চেয়ে ভালো। তাহলে এখানে বলা যেতে পারে যে, বাছুরের মাংস খুব সহজে হজম হয় এবং ভেড়ার মাংসে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ।
ফল খাওয়া কতটা জরুরি: না, যারা মনে করেন ফল খেলে অ্যালার্জি বেশি বেড়ে যায়। তারা যদি ফল না খেতে চান তাহলে যথেষ্ট পরিমাণে সবজি খান। তাহলে আর আপনাকে ফল না খেলেও চলবে। কেননা, ফলের মধ্যে যেসব খাদ্যগুণ রয়েছে, সেগুলো কিন্তু সবজিতেও রয়েছে। তাই সমস্যা হলে বা খেতে ইচ্ছে না করলেও যে ফল খেতেই হবে, এমন কোন কথা নেই। সবজি আপনার জন্য উপযোগী।