খেলার খবর: সাম্প্রতিক সময়ে রানখরায় ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাকিব আল হাসানের ইনজুরির কারণে অন্তবর্তীকালীন অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয় রিয়াদকে। নেতৃত্বের গুরু দায়িত্ব কাঁধে আসার পর তার ওপর চাপ আরও বেড়ে যায়। সেই চাপের মধ্যেই সাড়ে আট বছর পর বুধবার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেলেন তিনি।
সাড়ে আট বছর পর টেস্টে সেঞ্চুরি কারার পর শোকর আদায়ে সেজদা দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার দেখাদেখি সেজদা দেন মেহেদী হাসান মিরাজও।
বুধবার দলের চরম বিপর্যয়ে মাঠে নেমেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে খেললেন অনিন্দ্যসুন্দর এক ইনিংস। হাঁকালেন অনবদ্য সেঞ্চুরি। চা বিরতির আগে শেষ বলে ব্রেন্ডন মাভুতার বলে ২ রান নিয়ে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
এ নিয়ে সাড়ে ৮ বছর পর টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন অংক ছোঁয়া ইনিংস খেলেন তিনি। সেটিই ছিল ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে তার প্রথম ও শেষ সেঞ্চুরি।
এরপর মাত্র একবার আশির ঘরে যান মাহমুদউল্লাহ। চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন মিস্টার কুল। টেস্টে পরের সময়টা একদম বাজে কাটছিল তার। মিরপুর টেস্টের আগে সবশেষ ৯ ইনিংসে একটিতেও ফিফটি পাননি। এ সেঞ্চুরি দিয়ে দলে নড়বড়ে হয়ে যাওয়া জায়গাটাও দৃঢ় করলেন তিনি।
জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে ২১৮ রানের লিড নিয়ে বুধবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দিনের শুরুতে মাত্র ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। দলের এমন কঠিন পরিস্থিতে হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
পঞ্চম উইকেটে অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে ১১৮ রানের জুটি গড়েন রিয়াদ। তাদের এই জুটিতে খেলায় ফেরে বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টে খেলতে নেমে ১১০ বলে চার বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারিতে ৬৭ রান করেন মিঠুন।
দলীয় ১৪৩ রানে মিঠুনের বিদায়ের পর সাত নম্বরে খেলতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আরিফুল হক। তিনি ফেরেন মাত্র ৫ রানে। তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ৭৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন রিয়াদ।
এই জুটিতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশ দলের এই অধিনায়ক। ১২২ বলে চারটি বাউন্ডারি এবং দুটি ছক্কার সাহায্যে সেঞ্চুরি (১০১) পূর্ণ করার পর ইনিংস ঘোষণা দেন রিয়াদ। ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ২ উইকেটে ৭৬ রান তুলেছেন জিম্বাবুয়ে। জয়ের জন্য বৃহস্পতিবার শেষ দিনে তাদের আরও ৩৬৭ রান করতে হবে। হাতে আছে ৮ উইকেট। আর এই ৮ উইকেট তুলে নিলেই প্রত্যাশিত জয় পাবে বাংলাদেশ দল।
এর আগে প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড ডাবল সেঞ্চুরি (২১৯),মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি (১৬১) এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ফিফটিতে (৬৮) রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। ৭ উইকেটে ৫২২ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন স্বাগতিক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৫ উইকেট নেন কাইল জার্ভিস।