ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালনরত ব্যক্তিকে এমপিওভূক্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরা সিটি কলেজ পরিচালনা পরিষদ। আর এ কারণে ওই জামাত নেতার নামে কোন মামলা নেই জানিয়ে তাকে শূন্য পদে এমপিওভূক্ত করার জন্য সুপারিশও করেছে কলেজটি সুযোগ্য(!) পরিচালনা পরিষদ।
উল্লেখ্য, বিগত ২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের সময় খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান খুলনা মহানগর ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে সভাপতি এ. কে. এম ফজলুল হক। তিনি কলারোয়া উপজেলার ঝিকরা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। ১৯৯৯ সালে খুলনা বিএল কলেজ থেকে এম এ পাশ করেন। সেসময় তিনি খুলনা মহানগর ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন।
এরপর সাতক্ষীরায় ফিরে শিক্ষাজীবন শেষে করে দায়িত্ব নেন কলারোয়া উপজেলার জামায়াতের। বর্তমানে তিনি কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন। খুলনায় দায়িত্ব পালন করার কারণে সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষের কাছে ফজলুল হকের পরিচিতি কম।
এদিকে ২০১৩ সালের পর থেকে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নূরুল হুদা পলাতক রয়েছে। এ কারণে ফজলুল হক সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারির দায়িত্বও পালন করছেন। নাশকতার অভিযোগের এ পর্যন্ত তার নামে বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে ৬টি মামলাও রয়েছে। এরমধ্যে ৫টি রয়েছে কলারোয়া থানায় আর পাটকেলঘাটা থানায় রয়েছে একটি। কলারোয়া থানার মামলা (১) নং- ২৯, ২৬ আগস্ট-২০১৬, জি আর নং- ২৪২/১৬, ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ধারা- ৩/৬ ১৯০৮। (২) কলারোয়া থানার মামলা নং- ১০- তাং ০৮/৩/১৩ ধারা, ১৪৩/১৪৭/৩২৩/ ৩৭৯/৩৮০/৪২৭/৪৩৬/ ৪৪৮ পি,সি। (৩) কলারোয়া থানার এফ আই আর নং- ৩০, ২৭ জুলাই ২০১৬; জি আর নং- ২০৭/১৬, তারিখ ২৭ জুলাই, ২০১৬ ধারা- ৩/৪ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন। (৪) কলারোয়া থানার এফ আই আর নং- ৫, তারিখ ০৬ সেপ্টে, ২০১৫, জি আর নং- ১৯৩/১৫, তারিখ ০৬- সেপ্টে, ২০১৫, ধারা- ৪/৩ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন,। (৫) কলারোয়া থানার মামলা নং ১২ তাং ১৫/৭/১৩ ধারা, ১৪৩/১৪৮/১৪৯/৩৪১/৩৭৯/ ৪২৭/১০৯।
জামাতের এই শীর্ষ নেতা এমপিওভূক্তির জন্য গত ৯ অক্টোবর’ ১৬ তারিখে আবেদন করেন। আর এ আবেদনের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ আবু সাঈদসহ কলেজের পরিচালনা পরিষদ রেজুলেশন করে তার এমপিওভূক্তির সুপারিশ করেছেন। আর এমপিওভূক্তির আবেদন পত্রে ফজলুল হকের নামে কোন মামলা নেই মর্মে সুপারিশ করেছেন কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এবং সদস্য সচিব অধ্যক্ষ আবু সাঈদ।
অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের অথের বিনিময়ে অধ্যক্ষ এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছে কলেজ পরিচালনা পরিষদ।
সরকার যখন জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ দমনে বদ্ধপরিকর তখন সাতক্ষীরা সিটি কলেজে জেলা জামাতের শীর্ষ একজন নেতা যে কিনা নাশকতার একাধিক মামলার আসামি তাকে এমপিওভূক্ত করার চেষ্টা সরকারের সাথে চরম প্রতারণা। এধরনের সুপারিশে হতাশ হয়েছেন স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্বাসী আ.লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষেরা। কি কারণে সিটি কলেজের মত প্রতিষ্ঠানকে জামায়াতের ঘাঁটি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা নিয়ে চলছে কানাঘুষা। জামাতের বাইতুল মালের বিপুল পরিমাণ অর্থই যে এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছে তা বুঝতে আর কারও বাকি নেই। এভাবে চলতে থাকলে সাতক্ষীরার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জামাতিকরণ ঠেকায় কে!
সচেতন মহলের দাবি বিষয়টির যথাযথ তদন্ত করে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকারের উদ্দেশ্যের সাথে প্রতারণা করে যে বা যারা জামাতের এসব শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে কলেজটির অধ্যক্ষ আবু সাঈদকে একাধিকবারের ফোন দিয়েও তার সাথে কোন সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।