অনলাইন ডেস্ক: পৃথিবীর মাটির নিচে টেকটনিক প্লেটগুলো একে অপরের নিচে ডুবে আছে। এসব প্লেট গ্রহের অভ্যন্তর থেকে জল গ্রহণ করে- এমনটাই ভাবা হতো আগে।
গত ১৪ নভেম্বর ‘ন্যাচার’ পত্রিকায় গবেষণার নতুন ফল প্রকাশিত হয়েছে। ভূমিকম্প সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ এলাকা মারিয়ানাস ট্রেঞ্চ’র শব্দ ব্যবহার করে, যেখানে ফিলিপাইন প্লেটের নিচে প্যাসিফিক প্লেট সরে যাচ্ছে, গবেষকরা জানতে সক্ষম হয়েছেন ভূপৃষ্ঠের গভীর থেকে যে প্রচুর পানি প্লেটগুলো টেনে নেয়- তা সাগর-মহাসাগরেরই পানি।
কলম্বিয়ার ইউনিভার্সিটির ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ ওপেনভেটরির সামুদ্রিক ভূতত্ত্ব ও ভূ-পদার্থবিজ্ঞানী গবেষক ডোনা শিলিংটন লিখেছেন, পৃথিবীর গভীর জলের চক্র বোঝার জন্য এই আবিষ্কারের গুরুত্ব রয়েছে।
গভীর জলের চক্র
সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষকদলের প্রধান চেন কাই এবং তার সহকর্মীরা লিখেছেন, সাগরের খনিজ পদার্থের স্ফটিক গঠনে পানি জমা হয়। পৃথিবীকে ভূতাত্ত্বিকভাবে তিনটি স্তরে ভাগ করা যায় ক্রাস্ট, ম্যানটল ও কোর। ক্রাস্ট অংশ পানি টেনে নেয় যখন সাগরের নতুন ফুটন্ত গরম প্লেট গঠিত হয় এবং যখন এই প্লেটগুলো পাশের প্লেটের নিচে ঘর্ষণে চূর্ণ হয়ে পড়ে। পরের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় সাবডাকশন। এই প্রক্রিয়ায়ই ক্রাস্ট ও ম্যানটল অংশ প্রচুর পানি সাগর থেকে টেনে নেয়। যদিও কী পরিমাণ পানি এই সময় প্রবেশ করে- তা গবেষণায় এখনো জানা যায়নি। তাঁরা আরো লিখেছেন, ‘এটা জানা গেছে যে সাবডাক্টিং স্লাব দ্বারা পানি আসে।
কাই বলেন, ভূপৃষ্ঠের ১৮ কিলোমিটার নিচে ক্রাস্ট যে পানি গ্রহণ করে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে গবেষণায়। পরিমাপকৃত বেগ ব্যবহার করে সেখানে পাওয়া তাপমাত্রা এবং চাপসহ দলটি হিসাব করে দেখেছে যে সাবডাকশন অঞ্চল প্রতি মিলিয়ন বছর তিন বিলিয়ন টেরাগ্রাম (এক টেরাগ্রাম এক বিলিয়ন কিলোগ্রামের সমান) পানি টানে।
সমুদ্রের পানির ক্ষেত্রে প্রতি পাশে এক মিটার (৩.৩ ফুট) পানির ঘনত্ব এক হাজার ২৪ কিলোগ্রাম (২২৫০ পাউন্ড)। কিন্তু এখনো, সাবডাকশন অঞ্চল যে পরিমাণ পানি টানে তা চমকে ওঠার মতো।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, টেনে নেওয়া পানি সাধারণত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের উপাদান এবং কতটা পানি সমুদ্র থেকে চলে যাচ্ছে তা অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে কতটুকু নির্গত হয়, অর্থাৎ পৃথিবীর অভ্যন্তর দিয়ে কী পরিমাণ পানি হারিয়ে যাচ্ছে যা সাগর আর ফিরে পাচ্ছে না- বিজ্ঞানীরা তা অনুমানে অক্ষম।
এ বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা কী- তার অনুসন্ধানে বিজ্ঞানীদের আরো অনেক গবেষণা প্রয়োজন।
সূত্র : ফক্স নিউজ