অনলাইন ডেস্ক: দরজাটি বন্ধ হয়ে গেছে তার জন্য। সেই দরজার সামনে বসে আড়াই বছরের মেয়ে সন্তানকে নিয়ে কেঁদে চলছেন ২৩ বছর বয়সী পাপিয়া সুলতানা। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের এলাহিগঞ্জ এলাকার ঘটনা এটি। গলির মাঝে সেই বাড়িটির সামনে অসহায় মা-মেয়েকে দেখে কেউ চমকে উঠেছেন। কেউ এনে দিয়েছেন দুধ, চা, পাউরুটি। কেউ আবার তালা ভেঙে বাড়িতে ঢোকার সাহস জুগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সাহসে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না পাপিয়া। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? কী তাদের পরিচয়?
পাপিয়া সুলতানার অভিযোগ, ‘বিয়ের সময় স্বামী মাইনুল ইসলাম নগদ আড়াই লাখ টাকা, পাঁচ ভরি সোনা ও অন্য সামগ্রী যৌতুক হিসেবে নিয়েছে। আড়াই বছর আগে মেয়ে হওয়ার পরে স্বামী বলেন, মেয়ে হলো কেন? আরও পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দিবি। বাবার বাড়ি থেকে সেই টাকা দিতে না পারায় বৃহস্পতিবার আমাকে ও মেয়েকে বাড়ি থেকে বের দিয়েছে।’
যদিও সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে, সেটা নির্ভর করে পুরুষের ক্রমোজমের ওপর। সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে মেয়েদের কোনো ভূমিকা নেই।
পাপিয়ার স্বামী ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা হওয়ায় প্রতিবেশীরা কিছু বলারও সাহস পান না। স্বামী বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর দুই দিন মেয়েকে নিয়ে এক পড়শির বাড়িতে ছিলেন। শনিবার সেখান থেকে ফিরে পাপিয়া দেখেন, শ্বশুরবাড়ির সদর দরজায় তালা ঝুলছে। বাড়িতে কেউ নেই। শেষ পর্যন্ত পড়শিদের থেকে একটা হাতুড়ি চেয়ে নিয়ে তালা ভেঙে মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকেছেন পাপিয়া।
তিনি বলেন, ‘ঢুকলাম তো বটে। কিন্তু এভাবে কতদিন থাকতে পারব, জানি না!’
স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে একবার মায়ের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন পাপিয়া। স্বামীর বিরুদ্ধে মামলাও করেন। মাসখানেক আগে গ্রাম্য সালিশির সিদ্ধান্ত মেনে মেয়েকে নিয়ে ফের স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন পাপিয়া। এরপর ফের টাকা চেয়ে শুরু হয় অত্যাচার। পাপিয়ার মা আঙ্গুরা বেওয়ার অভিযোগ, ‘ধার করে ২ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু জামাই ৫ লাখ টাকাই নেবে। এত টাকা কোথায় পাব, বলুন তো?