বিদেশের খবর: রুশ-ইউক্রেন সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। ১৬-৬০ বছর বয়সি রুশ নাগরিকদের ইউক্রেনে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনে। দেশটির সীমাম্ত বাহিনীর প্রধান পেত্রো সাইগিকাল এ ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়া প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো বলেছেন, রাশিয়া যাতে ইউক্রেনের মাটিতে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলতে না পারে, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে কৃষ্ণ সাগরের দ্বীপ সংলগ্ন ক্রাইমিয়া দখলের জন্য এমন নীতি নিয়েছিল রাশিয়া— সেই স্মৃতি থেকে সতর্ক থাকতে চাচ্ছে ইউক্রেন। এর আগে দেশের বেশ কয়েকটি অংশে সামরিক আইন জারি করেছে তারা। সম্প্রতি রুশ নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্রাইমিয়ার উপকূলে ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ আটক করার অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ২৪ জন ইউক্রেনীয় নৌসেনাকেও আটক করা হয় বলে দাবি করা হয়। সেই থেকেই দু’দেশের বিবাদ বেড়েছে।
ওই ২৪ জনকেই বিনা বিচারে দু’মাস আটকে রাখার কথা জানায় ক্রাইমিয়ার একটি আদালত। তবে বৃহস্পতিবার নৌবাহিনীর মধ্যে কয়েকজনকে আবার মস্কোয় পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার ইউক্রেনের সিদ্ধান্তের জেরে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাকারোভা বলেছেন, রুশ নাগরিকদের প্রবেশ রুখতে চাওয়া ইউক্রেনের নিজস্ব ‘ত্রুটি’কেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। তবে এই মুহূর্তে প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনার কথা তিনি কিছু বলেননি।
কিন্তু রুশ নাগরিকদের প্রবেশ রুখতে ইউক্রেনের সিদ্ধান্তে দু’দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা বিপাকে পড়বেন বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। কারণ রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যথেষ্ট সংযোগ রয়েছে। অনেক বাসিন্দারই বন্ধু বা আত্মীয় সীমান্তপারের অন্য দেশে থাকেন।
পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তা দেখে দু’দিন আগেই প্রেসিডেন্ট পোরোশেঙ্কো মন্তব্য করেছিলেন, তাঁরা যুদ্ধের জন্য তৈরি। দু’দেশের এই দ্বন্দ্ব চিন্তায় ফেলেছে বিশ্বকে। আর্জেন্টিনায় জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনেও যার প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট বলেছেন, জি ২০-তে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তিনি কোনও বৈঠক করবেন না। ইউক্রেনের জাহাজ ও নৌসেনাদের মুক্তি দিতে রাশিয়া রাজি না হওয়ায় বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক বাতিল হওয়া নিয়ে অনুশোচনা প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ দিন বলেন, ‘‘মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে আমরা দুঃখিত।’’
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও ইউরো নিউজ