শিক্ষা সংবাদ: ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হামিদা আলী বলেছেন, মানুষ গড়ার কারিগরের মতো করেই শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের গড়বেন। শিক্ষকদের এই মানসিকতা না থাকলে তো হবে না। ভিকারুননিসা এখন আর আগের ভিকারুননিসা নেই। এখন পড়াশোনার কোনো পরিবেশ নাই এখানে। ‘মানসিক নির্যাতনে ছাত্রী আত্মহত্যার’ ঘটনা নিয়ে গতকাল এসব কথা বলেন তিনি।
ভিকারুননিসায় টানা ২১ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করা এ শিক্ষিকা আরও বলেন, এখন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তেমন কোনো পড়াশোনা হয় না। প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা যেটুকু ফলাফল করছে সেটি বাইরে প্রাইভেট-টিউশনি করে করছে। শিক্ষকরা ভর্তিবাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। এসব বাণিজ্যের তদন্ত হওয়া উচিত। বাণিজ্য যারা করছে তাদের প্রকৃত চেহারা মানুষের সামনে উন্মোচন করা দরকার। এটি করা না হলে আজ হয়তো দেখা দেবে এক সমস্যা, কাল হবে আরেক সমস্যা। তিনি বলেন, ভিকারুননিসায় যা চলছে তা বলে শেষ করা যাবে না। এমন ঐতিহ্যবাহী স্কুলে কীভাবে অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া একের পর এক শিক্ষক ‘বাই রোটেশন’ অধ্যক্ষ হচ্ছেন? তাদের অভিজ্ঞতার কোনো বালাই থাকছে না। এ কারণেও বাড়ছে সমস্যা। অভিভাবকদের কেউ কেউ আমার কাছে এসে বলেন, তারা ৬ থেকে ৮ লাখ টাকায় তাদের সন্তানদের ভর্তি করাচ্ছেন। সাবেক অধ্যক্ষ হিসেবে এসব শুনলে অসুস্থ হয়ে যাই আমি। সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হামিদা আলী বলেন, বাবা-মা তার আদরের সন্তানকে মানুষ করতে শিক্ষকদের কাছে পাঠান। এই শিক্ষার্থীদের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব শিক্ষকদের। আমি ৫৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। শিক্ষার্থী নির্যাতন, নিপীড়নকে ভালোভাবে দেখার কোনো সুযোগ নাই। এগুলো নিষিদ্ধ। পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থী নকল করলে তো তাকে সংশোধন করতে হবে। এর শাস্তি তো ছাড়পত্র হতে পারে না। আমরা যেসব শিক্ষক পড়াই, আমাদেরও তো দোষ রয়েছে। তবে শুধু কেন শিক্ষার্থীর দোষ ধরা হবে? এমন ঘটনার নিন্দা জানাই। এমন শুনলে কষ্ট পাই আমি। এ শিক্ষাবিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি মানসিক কাউন্সেলিংও দরকার। তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে শিক্ষকদের।