নিজস্ব প্রতিবেদক: মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে যখন সারা দেশের ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করতে স্বোচ্চার, ঠিক তখনই সাতক্ষীরার তালা উপজেলার এক কলেজ শিক্ষক তার বাবার নামে আবারও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরি করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তালা উপজেলা মুড়াকলিয়া গ্রামের মোঃ শাহিনুর রহমান তার বাবা মৃত মোবারক আলীর নামে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরি করে গত ৩১তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী পুলিশ সুপার পদে চাকরি নেন। কিন্তু তার বাবার নামীয় মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভূয়া প্রমাণিত হওয়ায় তিনি ওই পদে সে সময় যোগদান করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি আবারও ওই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরি করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর সাতক্ষীরা তালা উপজেলার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা লিখিত আবেদন করে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলীর নামে মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরির প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে। তালা উপজেলার দুইজন যুদ্ধকালীন কমান্ডার আব্দুস সোবহান মাস্টার ও সুভাষ সরকারসহ ৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত ওই আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, তালা উপজেলা মুড়াকলিয়া গ্রামের মৃত এনাজউদ্দিনের পুত্র মৃত মোবারক আলী অবৈধভাবে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট সংগ্রহ করেন। যার গেজেট নং-২০৯৭, সনদ নং-ম-১৮২৫৩৭। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এনিয়ে মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সে সময় লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিষয়টি যথাযথ তদন্তের দাবি জানান। পরবর্তীতে অধিকতর যাচাই বাছাই করে মোবারক আলী একজন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হওয়ায সরাকর বিগত ২০১৩ সালের ৬ জুন এক গেজেটের মাধ্যমে মোবারক আলীর ওই সদন বাতিল ঘোষণা করেন। যার স্মারক নং-৪৮.০০.০০০০.০০৪.৭৫.১০৫.১২-৩১৮, তারিখ ০৬/০৬/২০১৩ ইং। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় আগামী ২১ জানুয়ারির মধ্যে যাচাই বাছাই করে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে। ওই ঘোষণার পর মৃত মোবারক আলীর ছেলে সুচতুর শাহিনুর রহমান তার বাবার নাম নতুন করে তালিকাভূক্ত করার জন্য অবৈধ পন্থায় দৌড়-ঝাপ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের। লিখিত আবেদনে মুক্তিযোদ্ধারা বাতিলকৃত ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলীর নাম যাতে কোনভাবে চূড়ান্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় স্থান না পায় সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়েছে। এদিকে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মৃত মোবারক আলী সরদারের নাম নতুন করে গেজেট বা তালিকাভূক্ত হতে না পারে সেজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে সম্প্রতি একইভাবে আবেদন করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। দুর্নীতি দমন কমিশন ইতিমধ্যে ওই আবেদনর প্রাপ্তিস্বীকারপত্র পাঠিয়েছেন। যার স্মারক নং-২৮০-২০১৬/২৩৫৯৫, তারিখ-০৭/০৬/২০১৬ ইং। এ ব্যাপারে শাহিনুর রহমান জানান, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি আরও জানান আমার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ সঠিক রয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে শাহিনুর সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক পদে চাকরিরত আছেন। ৩০ তম (শিক্ষ) বিসিএস এর মাধ্যমে তিনি প্রভাষক পদে চাকরি পান।
পূর্ববর্তী পোস্ট