বিদেশের খবর: বিনা দোষে স্বামীকে জেলে রাখার প্রতিবাদে অভিনব কায়দায় রাস্তায় নেমেছেচ চার নারী। নারীদের অভিযোগ গত তিন বছর ধরে তাদের স্বামীদের জেলে রাখা হয়েছে। ঠিক কি কারণে জেলে রাখা হয়েছে তার সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি বলে এসব নারীদের অভিযোগ।
এমন ঘটনা চীনের। তবে চীনের প্রশাসন জানায়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মুখ খোলার অভিযোগে তাদের জেলে রাখা হয়েছে। সোমবার রাষ্ট্রের কাছে সুবিচার চেয়ে দক্ষিণ বেজিংয়ের ‘হঙ্গসেকান পিপল’স হাই কোর্ট’-এর সামনে বিক্ষোভ দেখান ওইসব নারী। এজন্য প্রতিবাদ স্বরূপ তারা নিজেদের মাথা ন্যাড়া করেন।
ঘটনার বিস্তারিত সম্পর্কে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৯ জুলাই থেকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীদের ধরপাকড় শুরু হয় চীনে।
জেলে বন্দী আছেন এমন একজন অ্যাটর্নি ওয়াং কোয়ানঝাং। তিনি কিছু মানবাধিকার কর্মীদের সমর্থন করেছিলেন। জমি মাফিয়াদের হাতে আক্রান্ত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আরও অন্তত ২০০ আইনজীবীর সঙ্গে ‘রাষ্ট্রের ক্ষমতা নাশ করার চেষ্টা’র অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওয়াংকে।
কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এই গ্রেফতারির কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি বলে জানান, ওয়াংয়ের স্ত্রী লি ওয়েনজু। তার দাবি, কেন নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে বিচার প্রক্রিয়া চলছে না, আমি তার উত্তর চাই। কেনই বা বাড়ির লোককে ওয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না?
লি আরো জানান, গত তিন বছরে স্বামীর মুক্তি চেয়ে প্রশাসনের কাছে ৩০টির বেশি চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও চিঠির জবাব মেলেনি। গত এপ্রিল মাসে তিয়ানজিনে পুলিশের সদর দফতর পর্যন্ত, ১০০ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ আটকে দেয়। এ দিন চিনের ‘সুপ্রিম পিপল’স কোর্ট’কে বিষয়টি দেখার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছেন ওয়াংয়ের স্ত্রী।
আরেক মানবাধিকার কর্মী ঝাই ইয়ানমিনের স্ত্রী লিউ ইরমিন সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছেন, পুলিশি হেফাজতে তার স্বামীর ওপর চরম অত্যাচার চালানো হচ্ছে।
এই আন্দোলনের তৃতীয় ও চতুর্থ নারী-মুখ ইয়ান শানশান এবং ওয়াং ছিয়াওলিং। দু’জনের স্বামীই পেশায় আইনজীবী ছিলেন। এদেরও ‘অপরাধ’ ছিল আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ানো। এ রকম সরকারি বন্দির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে চীনে, জানালেন চার নারী। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি/ইয়াহু/আনন্দবাজার।