বিনোদনের খবর: আজ থেকে ৩০-৩৫ বছর এগে যখন আমরা গ্রামে গঞ্জে শুটিংয়ে যেতাম, নিম্নবিত্ত নারীরা শুটিং দেখতে ভিড় করতো। তাদের শরীর একটা শাড়ি দিয়ে পেঁচানো থাকতো। বলতাম তোমরা ব্লাউজ পরো না কেন? তারা বলতো ‘ব্লাউজ কিভাবে পরমু, আমাদের শাড়িটাই কষ্ট কইরা জোটে আফা আর ব্লাউজ, এইভাবেই আমাগো চইলা যায়।’ একটা সময় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এই দৃশ্য ছিল নিয়মিত।
কথাগুলো বলছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো-তে উপস্থিত হয়ে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও সক্ষমতার প্রসঙ্গে ব্লাউজ নিয়ে একটি মন্তব্য করেন। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড আকারে ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওটি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে অঞ্জনা বলেন, ‘আমার ভিডিওটির একটি অংশ কেটে ট্রল করা হচ্ছে। আমি কী বলতে চেয়েছি তা বুঝতে সক্ষম হয়নি অনেকেই। হয়তো আমারই ভুল যে আমি সংক্ষেপে কথা শেষ করতে চেয়েছি। আমার পাশে পোশাক শিল্পের একজন ব্যক্তি ছিলেন। যার কারণে আমি বর্তমান সময়ে পোশাকের সহজলভ্যতা নিয়ে কথা বলতে চেয়েছি। যারা ট্রল করছে তারা আজ থেকে ৩০-৩৫ বছর আগের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চেহারা দেখেনি।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সময়ের সাথে সাথে মানুষের সক্ষমতার হার বেড়েছে। গার্মেন্টস বেড়েছে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে এখন আর প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের শুধু শাড়ি দিয়ে শরীর ঢাকতে হয় না। তারা ব্লাউজের কাপড় কেনার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এই সক্ষমতায় বোঝায় দেশে এখন দারিদ্রতা নেই। গ্রামেগঞ্জে নারীরা এখন ম্যাক্সিও পরে।’
চিত্রনায়িকা অঞ্জনা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি কিন্তু ওই টক-শোতে অনেক ইতিবাচক কথা বলেছি। সেগুলো কিন্তু ভাইরাল হয়নি, ট্রল হয়নি। আমরা নেগেটিভ অর্থে একটা জিনিস ব্যাপকভাবে গ্রহণ করি, পজেটিভ নিতে চাই না। তারপরেও যদি আমার মন্তব্যে কেউ আহত হোন বা কাউকে আঘাত করে থাকি তাহলে আমাকে মাফ করে দেবেন। কিন্তু আমি বলবো আমার কথার মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করবেন। কারণ আমি ভুল কিছু বলিনি।’
অঞ্জনা দু’বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বর্তমানে তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। অঞ্জনা ১৯৭৬ সালে শামসুদ্দীন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমার মাধ্যমে অঞ্জনা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আসেন। তিনি প্রায় ১০০টির কাছাকাছি ছবিতে অভিনয় করেছেন।