বিদেশের খবর: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মত পাল্টেছেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এখনকার খবর, জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পরাজিত না করে তিনি সিরিয়া ছাড়বেন না। অর্থাৎ কয়েক দিন আগে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তিনি। আপাতত মার্কিন সেনারা সিরিয়াতেই থাকছে—এমনটিই জানিয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।
ট্রাম্পের সঙ্গে গত রবিবার মধ্যাহ্নভোজে দুই ঘণ্টা ধরে বৈঠক করার পর এসব জানান গ্রাহাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট কাজ শেষ করার গুরুত্ব বোঝেন। সাউথ ক্যারোলাইনার আইন প্রণেতা আরো বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) আমাকে এমন কিছু কথা বলেছেন, যা আমি জানতাম না। সিরিয়ায় আমরা যা করতে যাচ্ছি, সে ব্যাপারে তাঁর কথা আমাকে আশ্বস্ত করেছে।’ গ্রাহাম বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আইএসকে পুরোপুরি পরাজিত করেই সিরিয়া ছাড়বেন প্রেসিডেন্ট।’
তবে এর আগে ১৯ ডিসেম্বর এক টুইটে ট্রাম্প সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি ঘোষণা করেন। সে সময় ট্রাম্প দাবি করেন, সিরিয়ায় আইএসকে তাঁরা এরই মধ্যে পরাজিত করেছেন। তাঁর এই ঘোষণার পর সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। তাঁরা মনে করেন, ট্রাম্প পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত করে ব্যাখ্যা করছেন। একই সঙ্গে তাড়াহুড়া করে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সতর্ক করে দেন তাঁরা।
গ্রাহাম বলেন, ট্রাম্প ‘সিরিয়া প্রসঙ্গে ট্রাম্প দীর্ঘ সময় ধরে গভীর চিন্তা-ভাবনা করেছেন। সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব ভাবনা রয়েছে। আইএসের পরাজয়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন কুর্দি বাহিনীর সুরক্ষা এবং আমাদের প্রত্যাহারের পর ইরান এর থেকে ফায়দা নিতে পারবে না—এসব বিষয় নিশ্চিত করে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করবেন ট্রাম্প। সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী বিষয়ক কমিটির সদস্য গ্রাহাম প্রায়ই বিভিন্ন দেশের যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের কাছে যান। একসময় ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক ছিলেন তিনি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন ট্রাম্পের অন্যতম কাছের মানুষ তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগের দিন গ্রাহাম এবিসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা যদি এখনই সিরিয়া ছাড়ি তাহলে কুর্দিদের গলা কাটা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের কাছে গিয়ে তাঁকে পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানাব, যা সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা কখনোই করেননি।’ গ্রাহাম বলেন, ‘আমরা কাজটি (সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার) কী করে করব, তা পুনর্বিবেচনা করছেন প্রেসিডেন্ট। আমি বুঝতে পেরেছি, পুরো বিশ্বের পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালনের দায় আমাদের নয়।’
ট্রাম্পে এক ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা কল্যাণ কনওয়ে প্রেসিডেন্ট সিরিয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন বলে ইঙ্গিত দেন। তবে ট্রাম্পের মুখ থেকে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা বলা কঠিন। সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ওই ঘোষণার দিনই পদত্যাগ করেন। আফগানিস্তান থেকেও সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। সূত্র : এএফপি, সিএনএন।