দেশের খবর: যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিষিদ্ধের দাবি দেশ বেশ আগ থেকেই। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল ছাড়া তেমন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। জনসাধারণের এ দাবি বাস্তবায়ন আর কতদূর জানতে চাইলে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: জামায়াতের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে একটি মামলা রয়েছে। এ মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোন পদক্ষেপ নিতে পারি না। দ্রুত মামলার রায় হয়ে গেলে দলটি নিষিদ্ধ হবে।
বুধবার একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে সংসদ নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী।
প্রধানমন্ত্রীকে করা প্রশ্নে তিনি বলেন: একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ২২ জন জামায়াত নেতা ধানের শীষ প্রতীকে এবং বাকি ২ জন মোট ২৪ জন নির্বাচন কমিশনে জামায়াত প্রার্থী বলে উল্লেখ করে।ড.কামাল হোসেন কিংবা বিএনপি তখন কিন্তু স্বীকার করেনি তারা তাদের জোটে জামায়াতকে নিয়ে ছিল।
তিনি যোগ করেন: জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে সে মামলাটা আমরা (তরিকত ফেডারেশন) করেছিলাম। আমাদের ওই মামলার কারণে তারা আজকে বাধ্য হয়ে ধানের শীষ নির্বাচনে অংশ নিতে হয়েছে। আমাদের কাজ আমরা করেছি এখন সবাই তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে। নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, যুদ্ধাপরাধের কিছু মামলা চলমান প্রক্রিয়াধীন। দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের সহায় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা একই সঙ্গে বিদেশে পালাতক তারেক জিয়াকে ফেরত কিভাবে সম্পন্ন।
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন: জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর ছিল। এদেশে গণধর্ষণ থেকে শুরু করে লুটপাট-অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের অপরাধ সংগঠন করেছিলো। সেই অপরাধের বিচার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর শুরু করেছিলেন। কিন্তু ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর যখন জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই বিচারকার্য বন্ধ করে দেয়। তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয় এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়। যেটা আমাদের সংবিধানে ছিল না।
জিয়াউর রহমান জামায়াতকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করার যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছিলেন তা তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন: জিয়াউর রহমান সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় এবং ৩৮ অনুচ্ছেদ আংশিক সংশোধন জামায়াতকে করে এদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়।
তবে এখন জামায়াত নিষিদ্ধ সময়ের দাবি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন: এখন সারাদেশে জনমত এমনভাবে সৃষ্টি হয়েছে জামায়াতকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। নিবন্ধনের জন্য তাদের নির্বাচন কমিশনের যে শর্তগুলো পূরণ প্রয়োজন ছিল তা তারা করতে পারেনি। তাদের নিষিদ্ধ করার জন্য কোর্টে একটি মামলা রয়ে গেছে। সেই মামলার রায়টা যতক্ষণ পর্যন্ত না হবে আমরা কোন কিছু করতে পারি না। কোর্টের রায়টা যদি দ্রুত হয়ে যায় তাহলে জামায়াত দল হিসেবে নিষিদ্ধ হবে।
নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বিএনপির ধানের শীষে জামায়াতের জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যোগ করেন: কিন্তু আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ জানাই। তারা তাদেরকে ভোট দেয়নি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। যারা দুর্নীতি মামলায় বিদেশে পলাতক আসামি (তারেক রহমান) তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য আলাপ-আলোচনা চলছে। আমার বিশ্বাস তাদেরকে আমরা আমরা দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে পারব।