দেশের খবর: পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ৯৮ শতাংশ ইটভাটা নতুন আইন অনুযায়ী অবৈধ। নতুন আইনে বলা হয়েছে কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যবে না। জনবসতি, খামার, বাজার এলাকায় ইটভাটা করা যাবে না। কৃষি জমি থেকে মাটি নিয়ে ইট বানানো যাবে না।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে, বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের অন্যতম উৎস ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের মতে, রাজধানীসহ দেশের সামগ্রিক পরিবেশ দূষণের ৫৬ শতাংশের উৎস ইটভাটা। পরিবেশ ও বন রক্ষায় ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৯তম। ইটভাটার দূষণ বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই নদী দখল উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী তীরের ইটভাটার বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। এমনও দেখা গেছে এক দিনে একাধিক ইটাভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক দিনে ছয়টি অবৈধ ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়। গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর পশ্চিম ডগরী এলাকায় ছয়টি অবৈধ ইটভাটার মালিককে সাড়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ইটভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জে সড়ক মহাসড়কের পাশে কৃষি জমিতে কিংবা গাছ কেটে অনেক ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। দেশজুড়েই রয়েছে এ রকম ইটভাটা। ঢাকা শহরের কোলঘেঁষে এখনও রয়েছে ইটভাটার অস্তিত্ব। ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা সাভার, ধামরাই, আশুলিয়ায় ইটভাটা বেশি। আশুলিয়ায় তুরাগ নদের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ২০টি ইটভাটা ছিল। পরিবেশ অধিদপ্তর গেল মাসে ১২টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে তিনটি গুঁড়িয়ে দেয়। ছয়টি ভাটার আংশিক ভেঙে দিয়েছে। পাশাপাশি এক সপ্তাহের মধ্যে এসব ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া এবং আবাসিক এলাকা ও তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। ইটভাটাগুলোকে পরিবেশবান্ধব করতে সরকার ২০১৮ সালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ জারি করে। নতুন আইনে ইটভাটাকে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে রূপান্তর করার কথা।
বেসরকারি সংগঠন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) জানায়, দেশের ৭ হাজার ৭৭২টি ইটভাটার মধ্যে ২ হাজার ২২৩টি উন্নত প্রযুক্তি গ্রহণ করেনি। অথচ গেল বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন। এ আইনে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা, কৃষি জমি, বন, জলাভূমি, জনবসতি, সড়কের পাশে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।