ভিন্ন স্বাদের সংবাদ: ব্ল্যাকহোল হচ্ছে মহাজগতের সবচেয়ে রহস্যময় বিষয়। জোতির্বিজ্ঞানীরা এবার এমন একটি অবজেক্টের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন, যা এই মহাবিশ্বে রহস্যময় ঘটনা। ব্ল্যাকহোল নিজে এমন একটি মহাজাগতিক ধাঁধা, যেখান থেকে কোনো কিছুই ফিরে আসে না। যা মানুষের দেখার সাধ্যের বাইরে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) জোতির্বিজ্ঞানিরা ৬টি সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্বের কাছে ব্ল্যাক হোল বা কৃষগহ্বরের প্রথম ছবি প্রকাশ করেন। ছবিতে যা দেখা গেছে, তা সুর্যের ভরের চেয়ে ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন গুণ বেশি।
কোনো বস্তুতে আলো পড়লে সেই আলো যদি প্রতিবিম্বিত হয়ে আমাদের চোখে ফিরে আসে তাহলে আমরা সেই বস্তুকে দেখি। অর্থাৎ, বস্তু হতে প্রতিফলিত আলোকের ফোটন কণাকে চোখ গ্রহণ করে। তারপর মস্তিষ্ক সেই ফোটন কণা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা বোধগম্য করে। বস্তু থেকে আলো ফিরে না আসলে মানুষ দেখে না। তাই এমন কোনো বস্তুর ওপর যদি আলো পড়ে, যা থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে আসতে পারবে না, তাহলে তা মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়।
ব্ল্যাকহোল। কৃষ্ণগহবর। প্রচণ্ড শক্তিশালী অভিকর্ষ বলের টানে সবকিছু শোষণ করে নিজের দিকে নেয়। এর চরিত্র এতই সর্বগ্রাসী যেকোনো ধরনের তরঙ্গ এমনকি আলোও শোষিত হয়ে যায়। তাই কোনো মানবচক্ষু ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহবর দেখেনি। কোনো শক্তিশালী ক্যামেরা বা টেলিস্কোপও ব্ল্যাকহোলের ছবি তুলতে পারেনি। তবে এবার সে বাঁধা অতিক্রম করেছে বিজ্ঞান।
এই ছবিটি তুলেছে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ। ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ আটটি বেতার টেলিস্কোপের একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক। আটটি আলাদা টেলিস্কোপ স্থাপন করা হয়েছিলো হাওয়াই, অ্যারিজোনা, স্পেন, মেক্সিকো, চিলি ও দক্ষিণ মেরুতে। যা একটি পৃথিবী সমান ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ তৈরি করেছিল। প্রত্যেকেই আলদাভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছে। সব তথ্য জড়ো করে একটি সুপার কম্পিউটার তৈরি করেছে একক একটি ছবি। যে ছবিটিকে আমরা ব্ল্যাকহোলের ছবি হিসেবে দেখছি।
যে ব্ল্যাকহোলটির ছবি তোলা হয়েছে, তা মেসিয়ার৮৭ গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত। তবে তা আমাদের পৃথিবী থেকে ৫৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে ও পৃথিবীর চেয়ে ৩ মিলিয়ন গুণ বড়।