দেশের খবর: মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর চাকরিচ্যুতও হতে পারেন। আর কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হবে।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মন্ত্রিসভার সংবাদ বিফ্রিংয়ে সাংবাদিকরা জামালপুরের ডিসির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি, শাস্তি হবে ইনশাল্লাহ। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, যদি তদন্তে (অভিযোগ) প্রমাণিত না হয় তবে কাউকে শাস্তি দেওয়া কঠিন। আমরা এ জন্য কমিটি করেছি। কমিটি দেখবে এটা। অবজেক্টটিভলি দেখবে, নিরপেক্ষভাবে দেখবে। টেকনিক্যালি এটার মধ্যে যদি কোনো ম্যানুপুলেশন থাকে তারা সেটাও যাচাই করবে এক্সপার্ট দিয়ে। সে জন্য এক্সপার্টও সঙ্গে রাখা হয়েছে। যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী ধরনের শাস্তি হতে পারে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ডিসিপ্লিন অ্যান্ড আপিল রুল যেটা- সেখানে ডিসমিসাল হতে পারে চাকরি থেকে অথবা নিচের পদে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে। গুরুদণ্ড হতে পারে। শফিউল আলম বলেন, কার্যপরিধির বাইরেও যদি কোনো ইনফরমেশন চলে আসে তবে গঠিত তদন্ত কমিটি বলতে পারে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগও আছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার একটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গত রোববার জামালপুরের ডিসি আহমেদ কবীরকে সেখান থেকে প্রত্যাহার এবং ওএসডি করে সরকার।
জ্ঞান হারালেন আলোচিত সেই নারী : জামালপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া অফিস সহায়ক ওই নারী তার কর্মস্থলে এসে ছুটির আবেদন করেছেন। তবে আবেদনের আগে জেলা প্রশাসকের অপেক্ষমান কক্ষে বসে থাকা অবস্থায় ওই নারী জ্ঞান হারান। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ডিসিকে নির্দোষ দাবি করে বাঁচার আকুতি জানান। গতকাল জামালপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কর্মরত আলোচিত সেই নারী অফিস সহায়ক তার কর্মস্থলে যোগ দেন। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া অফিস সহায়ক সানজিদা ইয়াসমিন সাধনাকে প্রশ্ন করলে তার জবাবে বলেন, ভিডিওটি কীভাবে ফাঁস হয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে জেলা প্রশাসকের কোনো দোষ নেই, ‘তিনি আমার কোনো ক্ষতি করেননি’ দাবি করে বলেন, আমার বাঁচার কোনো ইচ্ছা নেই, শুধু আমার এতিম বাচ্চার জন্য বেঁচে আছি, আপনারা আমাকে বাঁচার সুযোগ দিন। এ সময় ছুটির আবেদনপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসকের অপেক্ষমান কক্ষে বসে থাকায় অবস্থায় তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই কেউ কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই দ্রুত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন। জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজিব কুমার সরকার জানান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কর্মরত সানজিদা ইয়াসমীন সাধনা কর্মস্থলে এসে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিন দিনের ছুটির আবেদন করেছেন, আমরা আবেদনটি গ্রহণ করেছি। নতুন জেলা প্রশাসক দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্তসাপেক্ষে ওই অফিস সহায়কের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।