স্পোর্টস ডেস্ক : একটা অপেক্ষার অবসান হওয়ার সুযোগ ছিল। সুযোগ ছিল প্রায় ৮ বছর পর বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জেতার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ওডিআইতে ৭০ রানে হেরে সেই সুযোগ মাটি হল।
বাংলাদেশ কেন এই ম্যাচে হারলো, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে টপঅর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা সবার আগে বলতে হয়। কিন্তু সেই ব্যর্থতার আগেই তো ভুল চিত্রনাট্য নিজেদের হাতে গড়া হয়েছিল!
টস জিতে মাশরাফি ফিল্ডিং নেওয়ার পর অনেকের চোখ কপালে ওঠে। এই সিদ্ধান্ত মাশরাফির একার নয়। টস জেতার পর কী নেওয়া হবে, এটা কখনো অধিনায়ক একা ঠিক করেন না। আগে থেকেই থিমট্যাঙ্ক সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। তারা নিশ্চয়ই কিছু একটা বুঝে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু গোটা ম্যাচে সেই ‘কিছু একটা’র কোন উত্তর খুঁজে পাওয়া গেল না।
ম্যাচের আগেরদিন মাশরাফি একটা ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। সেই ইচ্ছা তার পূরণ হয়েছে। কিন্তু ম্যাচ জিততে পারেননি।
ম্যাশ বলেছিলেন, আগে বল করলে ২৮০ রানের ভেতর লঙ্কানদের আটকাতে চাইবে তার দল। হল ঠিক সেটাই। ২৮০তে আটকে যায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশি বোলারদের ভেতর কেউ সেভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। থিসারা পেরেরা ৪০ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে দলের স্কোর বড় করেন। আর শুরুতে অর্ধশতক পান কুশল মেন্ডিস (৫৪)।
মাশরাফি শেষ দিকে এক ওভারে দুই উইকেটসহ মোট তিনটি পেলেও রান দিয়েছেন ৬৫। ছন্দ খুঁজে ফেরা মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ২ উইকেট নিয়ে ৫৫ রান দেন। মিরাজ এক উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৪৯। তাসকিন ৮ ওভারেই দিয়েছেন ৫০। কোন উইকেট পাননি। সাকিবও উইকেট নিতে পারেননি। ৮ ওভারে রান দেন ৪১। বোলারদের এমন অসহায়ত্বের দিনে ডেথ ওভারে মাশরাফির দাপটের কারণে ৩০০ পার হয়নি স্বাগতিকদের ইনিংস। কিন্তু জয় দেখা হল না ব্যাটসম্যানদের দীনতায়।
শুরুটা হয় তামিমকে (৪) দিয়ে। কুলাসেকারার করা প্রথম ওভারের শেষ বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর ২৪ ওভারের ভেতর একে একে ফিরে যান আরও পাঁচজন।
তামিম ফিরে যাওয়ার পরের ওভারের শেষ বলে ফিরতে হয় সাব্বিরকে (০)। কুলাসেকারার বলে ক্যাচ দেন চান্দিমালের হাতে। পরের ওভারের তৃতীয় বলে ফিরে যান মুশফিক (০)। তিনি লাকমলের বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন। তিন উইকেট পড়ার পর সৌম্যকে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান। ১৬তম ওভারে ৭৭ রানের মাথায় ভাঙে তাদের জুটি। সৌম্য (৩৮) স্টাম্পিং হয়ে ফিরে যান।
সাকিব লড়াইটা বাঁচিয়ে রাখেন। ক্যারিয়ারের ৩৪তম অর্ধশতকও তুলে নেন। কিন্তু তাকেও ফিরতে হয় ৫৪ রানের মাথায়।
সাকিব ফিরে যাওয়ার পরই ম্যাচের পরিণতি স্পষ্ট হতে থাকে। তার আগে আক্ষেপের কাব্য লিখে যান মেহেদি হাসান মিরাজ। সিনিয়ররা যা পারেননি তাই করে দেখান তিনি। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক। তাসকিনকে নিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ রানের জুটি গড়েন। কুলাসেকারার বলে থারাঙ্গার হাতে ক্যাচ দেন ব্যক্তিগত ৫১ রানের মাথায়। যে প্রদীপ নিভে যাবে, তাকে জ্বালানোর বৃথা চেষ্টার কবিতা লিখে যান কলম্বোর সবুজ ঘাসে!