গাজী আল ইমরান, শ্যামনগর: পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের পাদদেশে মুন্সিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মালঞ্চ নদীর বেড়ী বাঁধের উপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫ নং পোল্ডারটি অবস্থিত। যার যে এস নং ১৬। এটি দীর্ঘদিন যাবৎ বেহাল দশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত ও চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
শ্যামনগরে এই স্লুইজ গেট রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করলেন সুন্দরবন স্টুডেন্ট’স সলিডারিটি টিম। মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় শ্যামনগরের উপজেলার মুন্সিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন অবিলম্বে স্লুইজ গেটটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের দাবিতে সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিম, কলবাড়ী নেকজানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও বারসিক যৌথভাবে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইজ গেট যার পোল্ডার নং ০৫ জে এস ১৬ (ঢ়ড়ষফবৎ হড়-০৫, লং ১৬) টি দীর্ঘদিন যাবৎ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। খোলপেটুয়া নদীর ওয়াপদা বাঁধের উপর নির্মিত স্লুইজ গেটটি রাস্তা ছাড়া ছোট হওয়াতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে দেদারছে। পোল্ডারটির উপরে যে হাতল (নিরাপত্তা বেষ্টনী) থাকে সেটা আজ থেকে ৫ বছর আগে ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে যানবাহন চলাচল সহ, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
মানববন্ধনকালীন সময়ে বক্তব্য রাখেন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর, প্রধান শিক্ষক সুভাশীষ মন্ডল, শিক্ষক নিমাই চন্দ্র মন্ডল, শিক্ষক নবতারণ মন্ডল, সাংবাদিক গাজী আল ইমরান, উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কুমুদ রঞ্জন গায়েন, সুন্দরবন স্টুডেন্ট’স সলিডারিটি টিমের সভাপতি মারুফ হোসেন মিলন,সহ-সভাপতি গাজী আব্দুল আলিম,মুন্সিগঞ্জ ইউনিট সভাপতি হাফিজুর রহমান, বাজার কমিটির সদস্যবৃন্দ ও বারসিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
মানববন্ধনকালীন সময়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, মুন্সিগঞ্জ বাজার থেকে নীলডুমূর যাওয়ার একমাত্র সড়কের মাঝে নীরব কান্না যেন কেউই শুনছে না। মুন্সিগঞ্জ বাজারের উপরের স্লুইজ গেটটি সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষদের। এটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। নীরবে-নিভৃতে কাদঁছে গুরুত্বপূর্ণ এই স্লুইজ গেটটি। সংস্কারের অভাবে এটি এখন মরণ ফাদ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, উক্ত স্থানটিতে যানবাহন ও পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। স্লুইজ গেটটির দুই সাইডের রেলিং ভেঙে যাওয়ায় যে কোন সময় বড় ধরনের বিপদ ঘটে যেতে পারে পথ চারিদের।এর আগে একজন পথচারি সাইকেল নিয়ে পড়ে গিয়ে ব্যপকভাবে আহত হয় কিন্তু প্রাণে বেঁচে গেলেও তার ব্যবহৃত সাইকেলটি উদ্ধার করতে পারেনি। স্লুইজ গেটটির দূরাবস্থা দেখার যেন কেউ নেই? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি বিদ্যালয়, আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম, মুন্সিগঞ্জ ফাড়ি, নীলডমুর বিজিবি ক্যাম্পসহ হাজার মানুষের চলাচলের জন্য একমাত্র ভরসা এই সড়কটি। কিন্ত মুন্সিগঞ্জ বাজার পার হয়েই স্লইজ গেটটি সামনে পড়লেই ভয়ে আতকে ওঠে পথচারীরা। জ¦ালাময়ী বেহাল দশায় পতিত হয়ে আছে স্লুউজ গেটটি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর সাথে কথা বলার জন্য বার বার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। “সম্প্রতি ১ এপ্রিল ২০১৭ তারিখ সুন্দরবন ঘুরতে আসা একটি মটর সাইকেল রাস্তা ক্রসিংয়ের সময় স্লুইজ গেটের নিচে পড়ে একজন আরোহী মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সবসময় জনদুর্ভোগ লেগেই থাকে। যাতে অতিদ্রুত এই পোল্ডারটি সংস্কার করা যায়, এবং নতুন একটি পোল্ডার তৈরি করা যায় সেজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ উর্দ্ধতন কর্তাব্যক্তিদের আশু দৃষ্টি কামনা করছি।”
পূর্ববর্তী পোস্ট