কালিগঞ্জ প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে উপজেলা আওয়ামীলীগের নব গঠিত কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুল সাজুর নেতৃত্বে সংখ্যা লঘুদের জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) গভীররাতে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পূর্ব পাশে ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে টাকার বিনিময়ে সংখ্যালঘুদের জমি দখলে চেষ্টা করে সাজু এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। জমি দখলে বাঁধা প্রদান করতে গেলে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে আহত হন জমির মালিক প্রবাস হালদারের ছেলে প্রসেনজিৎ হালদার ও তার কাকাতো ভাই রামপ্রসাদ হালদার।
আহত রামপ্রসাদ হালদার ও প্রসনজিৎ হালদার জানান, বাজারের পূর্ব পাশে তাদের ঠাম্মা মৃত প্রমিলা হালদারের ৭১ খতিয়ানে ৬৯ শতক জমি রয়েছে। যার (এসএ নং ৯, সাবেক ৪)। তার ঠাম্মার মৃত্যুর পরে ওয়ারেশ সুত্রে দীর্ঘদিন দিন যাবত তাদের বাবা ও কাকারা ভোগ দখল করে আসছেন। কাউকে না জানিয়ে তাদের একমাত্র পিসি নিলু বালা হালদার ১৯৯৬ সালে ১১ শতক জমি স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক জব্বার সরদারের কাছে বিক্রি করে দেন।
পল্লী চিকিৎসক তাদের পিসির কাছ থেকে জমি কিনলেও কখনো দখল বুঝে নেয়নি। ওই জমি ২০১৪ নাশকতা মামলার আসামি আক্তারুজ্জামানের কাছে বিক্রি করে দেন জব্বার সরদার। বোনের বিক্রির জমির অংশ আক্তারুজ্জামানকে বাজারের পাশের দখল না দিয়ে অন্য স্থান দেওয়ার প্রস্তাব দেন তাদের বাবা ও কাকারা। তবে অন্য স্থানে জমি নিতে অসম্মতি প্রদান করেন আক্তারুজ্জামান ।
পরবর্তীতে গত ৪ মাস আগে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে বাজারের পাশে ওই ১১ শতক জমি দখল চেষ্টা করে সে। এসময় প্রমিলা সরকারের ৬ ছেলে সিদাম হালদার, বাসুদেব হালদার,বিমল হালদার,অনিল হালদার বিশ্বনাথ হালদার ও রতন হালদারের বাধার মুখে লোকজসহ ঘটনা স্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয় আক্তারুজ্জামান । পরবর্তীতে গত শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাজুর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আবারও ওই জমি দখলের চেষ্টা করে আক্তারুজ্জামান। এসময় জমিতে থাকা টিনের ঘর উচ্ছেদের চেষ্টা করে সাজুর সন্ত্রাসী বাহিনীরা। জমিও ঘর রক্ষার চেষ্টা করতে গেলে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন তারা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা কালিগঞ্জ থানায় খবর দিলে উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাজুর সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আক্তারুজ্জামান ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বিষয়টি সম্পর্কে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আক্তারুজ্জামান বলেন, আমার জমি আমি দখল করতে গিয়ে ছিলাম। অন্য কারো জমি তিনি দখল করতে যায়নি বলে জানান।
বিষয়টি জানার জন্য আওয়ামীলীগের নব গঠিত কমিটির কালিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুল হক সাজুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভীন জানান, দীর্ঘদিন যাবত দু’পক্ষের মধ্যে ১১ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত শনিবার রাতে আক্তারুজ্জামান সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জমি দখলের বিষয়টি তিনি শুনেছেন বলে জানান।
কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন সংখ্যালঘুদের জমি দখল হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরবর্তীতে জমি দখলের চেষ্টাকারী আক্তারুজ্জামান ও মৃত প্রমিলার ওয়ারেশদের বিরোধপূর্ণ জমিতে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।এছাড়া বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সহিংসতা মামলা আসামি আক্তারুজ্জামান ও আওয়ামীলীগ নেতা সাজুর হাত থেকে নিজেদের জমি রক্ষা পেতে প্রাশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছন ভূক্তভোগী সংখ্যালঘু পরিবার।