বলিউডে গত আড়াই দশক ধরেই চলছে খানদের রাজত্ব। বক্স-অফিস কখনো দখলে থাকছে শাহরুখ খানের, কখনো বা সালমান খানের। আবার কখনো বিগত সব রেকর্ড দুমড়েমুচড়ে নতুন রেকর্ডের মালিক হচ্ছেন আমির খান। তাই বলিউডের নায়কদের ঘোড়দৌড়ে এগিয়ে আছেন এই তিন ঘোড়া। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, এই তিনজনের মধ্যে সেরা কে? তাহলে এই তিন নায়কের বিশাল ভক্তদের মধ্যে লেগে যায় তর্কযুদ্ধ।
কিন্তু তর্কে কি আর সমাধান হয়। কারণ, অভিনয় দক্ষতা বা স্টাইলে কেউ কারো থেকে পিছিয়ে নন। কিন্তু এক জায়গায় এসে তিনজনের মধ্যেই তৈরি হয় ব্যবধান। সেটি হলো বক্স-অফিসের আয়। বলিউড লাইফ ডটকমের সৌজন্যে আমরা উপস্থাপন করছি এই তিন তারকার সেরা ছবিগুলোর আয়ের পরিসংখ্যান। তিন খানের সেরা কে, তার বিচার করবেন আপনারাই।
সেই নব্বইয়ের দশক থেকে বলিউডে আমাদের একের পর এক হিট ছবি দিয়ে চলেছেন তিন খান। তখনো বিতর্ক ছিল তিন খানের মধ্যে সেরা কোন খান। সেই বিতর্ক নতুনভাবে হালে পানি পায়, যখন ২০০৭ সালে শাহরুখ খানের ‘ওম শান্তি ওম’ আয় করে ৭৮ কোটি রুপি। সে বছর সর্বোচ্চ আয়ের তালিকায় ‘ওম শান্তি ওম’ প্রথম স্থান দখল করে। পরের বছর শাহরুখ ‘রাবনে বানাদি জোড়ি’ নিয়ে দর্শকের সামনে এলেও ‘গজনি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সে রেকর্ড ভেঙে ১০০ কোটি রুপির নতুন এক ক্লাব খুলে বসেন আমির। বলা বাহুল্য, সর্বোচ্চ আয়ের তালিকায় ‘গজনি’ সে বছর প্রথম স্থান দখল করে। শুরু হয়ে যায় এক নতুন যুদ্ধ। যুদ্ধের নাম, বক্স-অফিসের আয়ে সেরা কোন খান।
১০০ কোটির ক্লাবে হয়তো সুখ পাচ্ছিলেন না আমির। তাই ২০০৯ সালে ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির মাধ্যমে ২০০ কোটি রুপির নতুন এক ক্লাব খোলেন আমির। ভারতে প্রথম কোনো ছবির আয় ২০০ কোটি ছাড়ায়। বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া ছবিটির আয় থামে ২০২ কোটি রুপিতে এসে। খানদের যুদ্ধে এবার যোগ দেন সালমান খান। তাঁর অভিনীত ‘দাবাং’-এর আয় ছাড়ায় ১০০ কোটি রুপি।
‘দাবাং’ দিয়ে প্রবেশ করে ‘বডিগার্ড’ ও ‘এক থা টাইগার’ ছবির মাধ্যমে প্রায় দুই বছরের জন্য বক্স-অফিসটাকে নিজের দখলে নেন সালমান খান। এর মাঝে আমির খানের ‘তালাশ’ ও ‘ধোবি ঘাট’ মুক্তি পেলেও ধোপে টিকেনি একটিও। ‘রা ওয়ান’ ও ‘ডন-২ : দ্য কিং ইজ ব্যাক’-এর মাধ্যমে ১০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করেন শাহরুখ খান।
এর মধ্যে অনেক ছবি ১০০ কোটি স্পর্শ করলেও আমির খানের ২০০ কোটির রেকর্ড ভাঙতে পারছিলেন না কেউ। ২০১৩ সালে সবচেয়ে বড় আঘাত হানেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান। ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ দিয়ে তিনি ছাড়িয়ে যান আমির খানের ‘থ্রি ইডিয়টস’কে। ‘থ্রি ইডিয়টসে’র রেকর্ড ভেঙে যাওয়াটা হয়তো পছন্দ হয়নি আমিরের। তাই ২০১৩ সালে ‘ধুম-৩’ দিয়ে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেসে’র রেকর্ড ভাঙেন আমির।
শুধু ‘চেন্নাই এক্সপ্রেসে’র রেকর্ড ভেঙেই ক্ষান্ত হননি আমির, পরের বছর ‘পিকে’ ছবি দিয়ে ৩০০ কোটি রুপির নতুন ক্লাব খোলেন আমির। পরের বছর ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ দিয়ে আমিরের ৩০০ কোটির ক্লাবে যোগ দেন সালমান খান, কিন্তু ব্যর্থ হন ‘পিকে’র রেকর্ড ভাঙতে। অবশেষে ২০১৬ সালে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙেন আমির। ‘দঙ্গল’ ছবিটি দিয়ে প্রায় পৌনে ৪০০ কোটি রুপির ব্যবসা করেন তিনি।
এ বছর এখনো খানদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন শাহরুখ খান। তাঁর অভিনীত ‘রইস’-এর আয় তিনি নিজেও ছাড়াতে পারেননি। মুখ থুবড়ে পড়েছে তাঁর ‘যাব হ্যারি মেট সেজাল’। আর ১০০ কোটি রুপি আয় করলেও বক্স-অফিস আলোকিত করতে পারেনি সালমানের ‘টিউবলাইট’। তবে দিওয়ালিতে আমিরের ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ এবং বছরের শেষে সালমানের ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ বদলে দিতে পারে সমীকরণ।