পাইকগাছা প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছায় জন্মান্ধ ও বোবা ৩ সন্তানকে নিয়ে এক কালের জমিদার বংশ আজ পথের ভিখারী। বিষন্নতার কান্না প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের। দুঃখ, কষ্ট, লাঞ্চনা, বঞ্চনা কাকে বলে এ পরিবারটির দিকে তাকালে তা অনুভব করা যায়। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেছেন এ অসহায় পরিবারটি। খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার তোকিয়া গ্রামের আবুল কাশেম (আবুল) বিশ্বাসের ৩ সন্তানই জন্মান্ধ। আবুলের পূর্বসূরীরা ছিলেন জমিদার পরিবার। এ জমিদার পরিবারের উত্তরসূরী আবুল কাশেম (আবুল) বিশ্বাসের ৪ সন্তানের মধ্যে জাকির বিশ্বাস (৪০), ফারুক বিশ্বাস (৩৮), শেফালী খাতুন (২৬) জন্মান্ধ। প্রথম কন্যা সন্তানটি সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলেও অন্ধ ৩ সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সম্পদ-সম্পত্তি যা ছিল সবকিছুই ৩ সন্তানের চিকিৎসার পিছনে খুইয়ে আজ তিনি নিঃস্ব। শিশুকালে অন্ধাবস্থায় ফারুক ও জাকির ১০ পারা পর্যন্ত কোরআন শরীফ মুখস্থ করে বলে তারা জানায়। সাংসারিক অভাব অনাটনের জন্য আবুলের দু’পুত্র ফারুক ও জাকির ভিক্ষার পথ বেছে নেয়। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গদাইপুর বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকে কখন বাস আসে। বাস দাঁড়াতেই উঠে পড়ে তাতে যাত্রীদের কাছে ২/১ টি টাকার জন্য হাত পাততে থাকে। তা থেকে প্রতিদিন আয় ৪০/৫০ টাকা এবং ৬ মাস পরে দু’ভাইয়ের ৬ হাজার প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে চলে তাদের সংসার। তবে বিস্ময়কর হলো, চলাচল করতে পথ চিনিয়ে দিতে কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না তাদের। অনুভূতি ও নাকের ঘ্রাণ দিয়ে তাদের পথ চলা। ৮ বছর আগে পার্শ্ববর্তী থানা আশাশুনির মুড়োগাছা গ্রামের সুমি নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে ফারুক। সংসার জীবনে ফারুক ২ সন্তানের জনক। বর্তমানে সে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। শেফালী খাতুন আবুল বিশ্বাসের ছোট কন্যা সেও জন্মান্ধ ও বোবা। লোকজন গেলে কোন কিছুই বুঝতে না পারলেও ঘাড়-মুখ এদিক-ওদিক ফিরিয়ে ফ্যাল-ফ্যাল করে হাসে। সারা দিন ছোট্ট একটি ঘরে বসে কান্না-কাটি করে। তথ্য সংগ্রহে এ পরিবারে যাওয়ার পর অসহায় এ পরিবারের সকলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং বলতে থাকে এমনকি পাপ করেছি আল্লাহ আমাদের উপর এমননিভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছে। আবুল বিশ্বাসের দাদা খাতের আলী বিশ্বাস ছিলেন পাইকগাছার শীর্ষ জমিদার। অথচ আজ সে পরিবারটি সবকিছু হারিয়ে পথের ভিখারী। অসহায় এ পরিবারটির আয়ের কোন উৎস না থাকায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভাবনায় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেছেন তাদের পরিবার।
পূর্ববর্তী পোস্ট