বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সাথে ড্র। দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হার। এরপর আর্জেন্টিনার বিদায় দেখে ফেলেছিল অনেকেই। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। মেসি নিজে খানিকটা হলেও ফিরে পেয়েছেন নিজেকে, আর্জেন্টিনাও ছন্দ খুঁজে পেয়েছে। নাইজেরিয়াকে হারিয়ে কোনোক্রমে দ্বিতীয় পর্বে পা রেখেছে তারা।
এই দ্বিতীয় পর্বে আসার পথের জয়টাই এখন আত্মবিশ্বাসী করছে আর্জেন্টিনাকে। এখনও পর্যন্ত মাঠে নামতে না পারা আর্জেন্টিনার দুই তারকা ফাজিও ও লো সেলসো বলছিলেন, এই জয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। ফ্রান্সকে নিয়ে তারা খুবই সতর্ক। তবে তারা আত্মবিশ্বাসী যে, আর্জেন্টিনা জয়ের ধারাটা ধরে রাখতে পারবে।
ডিফেন্ডার ফাজিও বলছিলেন, জয়ের এই যে ধারায় তারা প্রবেশ করেছেন, এখন এটা ধরে রাখাই তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তারা পরষ্পরের সাথে আরো একতাবদ্ধ হয়ে জয়ের জন্য লড়তে চান, ‘জয়ের মানসিকতাটা সব অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যেটা করতে হবে, এই মানসিকতাটা ধরে রাখতে হবে। আমাদের জয়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। আর ভাবতে হবে, প্রতিটা ম্যাচই আমাদের শেষ ম্যাচ। আমরা মাঠে ও মাঠের বাইরে খুব একতাবদ্ধ আছি। আমরা জানি, আমরা একসাথে কাজ করলেই কেবল জয়টা পেতে পারি।’
এখনও পর্যন্ত খেলার সুযোগ না পাওয়া লো সেলসো বলছিলেন, তিনি সুযোগ পেলেই দলের জন্য ভালো কিছু করতে চান। আর এখন দল যেহেতু বড় চ্যালেঞ্জের সামনে, তারা প্রস্তুত হচ্ছেন, সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে, ‘আমি যখনই সুযোগ পাবো, চেষ্টা করবো, দলের জন্য কিছু অবদান রাখার। অবশ্যই আমি খেলতে চাই। প্রতিটা খেলোয়াড়ের মতো আমিও খেলতে চাই। তবে আমাদের দলে সুযোগ পেতে প্রতিদিন কষ্ট করে যেতে হবে। আমরা জানি, আমরা খুব শক্ত প্রতিপক্ষের মোকবেলা করতে যাচ্ছি। তাদের অনেক ভালো ভালো খেলোয়াড় আছে। তারা গ্রুপপর্বে অপরাজিত ছিল। তবে আমাদেরও ভালো খেলোয়াড় আছে। এটুকু বলতে পারি যে, এটা একটা বড় ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’
লো সেলসো বলছিলেন, ফ্রান্সকে নিয়ে তারা সতর্কই আছেন। তারা নিজেদের প্রতিটা ম্যাচকে এখন ফাইনাল মনে করছেন, ‘গ্রুপপর্বে আমরা ভিন্ন ভিন্ন দল নিয়ে চেষ্টা করেছি। ফ্রান্স অনেক বেশি স্পেস তৈরি করে এবং খুব গতি দিয়ে খেলার চেষ্টা করবে। ওরা ভালো ফল বের করার চেষ্টা করবে। তবে আমরাও একটা বড় দল। আমাদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমাদের যেসব খেলোয়াড় আছে, তার পুরো সুবিধা নিতে হবে। এখন প্রতিটা ম্যাচই ফাইনাল।’
এদিকে ফাজিও বলছিলেন, মেসিসহ পুরো দল নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জ্বলে ওঠায় দলের মানসিকতাই বদলে গেছে, ‘আমি মনে করি শেষ ম্যাচে আমরা একটা ভিন্ন মনোভাব দেখিয়েছি। শুধু তার (মেসি) কাছ থেকে নয় বরং পুরো দলের কাছ থেকেই, সব খেলোয়াড়ের থেকে। আমি মনে করি সব কিছুর পরও আমরা ক্রোয়েশিয়ার (৩-০ গোলে হার) বিপক্ষে ভালোই খেলেছিলাম। কিন্তু এই তৃতীয় ম্যাচে, আমার মনে হয় তাদের প্রথম গোল আমাদের আঘাত করতেই পারত। কিন্তু আমরা ঝুঁকিতে আছি তা সবাই শুরু থেকে জানতাম। আর যদি হারি তবে কি ঘটবে তাও জানতাম।’
ফাজিও বলছিলেন, তার মতেও এখন প্রতিটা ম্যাচ আসলে শেষ ম্যাচ। ফলে তারা এখনই ট্রফি বা অন্য কিছু নিয়ে না ভেবে কেবল সামনের ম্যাচটা নিয়ে ভাবছেন, ‘আমরা এখনই ট্রফির ফেভারিট দল নিয়ে ভাবছি না। আমরা এখন সামনের ম্যাচটা নিয়েই যতদূর সম্ভব ভাবার চেষ্টা করছি। আমাদেরকে পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের ভাবতে হবে, কী করলে আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে পারি। আমরা এখন পরস্পরের আরো কাছে আসার চেষ্টা করছি। এতে আমরা দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারছি।’