দেশের খবর: ‘ম্যানার শেখানো’ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সমর্থকদের মধ্যে ওই হাতাহাতি ঘটে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে ওই ঘটনা ঘটে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনাসভার আয়োজন করে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ। সভা শেষ হওয়ার পরই হাতাহাতি শুরু হয়।
টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত ওই আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, টিএসসি মিলনায়তনে সভাশেষে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সভাপতি শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম বের হয়ে যান। এতে পেছনে পড়ে যান ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত।
এদিকে নানকের সঙ্গে বাকিরা থাকায় তাঁদের অনুসারীদের উপস্থিতিতে সেখানে বিরাট জটলা বেধে যায়। এ জটলার কারণে সনজিত টিএসসি থেকে বের হতে পারছিলেন না। বের হওয়ার সময় একুশে হলের একজনের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় সনজিত তাঁকে থাপ্পড় দেন। নানক চলে যাওয়ার পরে সনজিত শোভনকে বলেন, ‘আপনার ছেলেদের কোনো ম্যানার শেখান নাই? তারা আমাকে বের হওয়ার জায়গা দেয় নাই কেন?’
এ সময় সূর্যসেন হলের আসলাম নামের একজন প্রতিবাদ করে বলেন, ‘কী ম্যানার শেখাতে হবে?’ তখন সনজিত আসলামকে মারধর করেন। এর পরই দুই পক্ষে ঝামেলা শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিটের মতো এ হাতাহাতি ও মারামারি চলে।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিনিধির কাছে আছে। সেখানে দেখা যায়, টিএসসি প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়ায়। ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে দেখা গেছে। তবে, ছাত্রলীগের শীর্ষ এ চার নেতার কাউকেই হাতাহাতি থামাতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি আর শোভন ভাই কথা বলছিলাম। এ সময় বাইরের কয়েকজন এসে সেখানে চিল্লাচিল্লি করছিলেন। আমরা তাদের চিনি না। কেউই চিনে না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হতেও পারে, নাও হতে পারে। আমি শিউর না। পোলাপানের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল, তারা ওদের সরিয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের থামিয়ে দিয়েছি।’
দুজনকে মারধরের বিষয়ে জানতে সনজিতকে আবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে সাদ্দাম নিশ্চিত করেছেন যে, হাতাহাতিতে জড়ানো ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জুনিয়র নেতাকর্মী। তবে তিনি ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিতির বিষয়ে অস্বীকার করেছেন। যদিও প্রমাণ দেওয়ার পর স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘টিএসসিতে গোলযোগ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। জুনিয়রদের মধ্যে মনে হয় কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে সিনিয়ররা কিছুই করেনি। আমরা তা দেখিনি। গোলযোগের সময়ে আমরা সেখানে ছিলাম না। আমরা আসার পরে তা হয়ে থাকতে পারে।’
ভিডিওতে আপনাদের দেখা যাচ্ছে বললে তারপর সাদ্দাম উপস্থিতির কথা স্বীকার করেন। বলেন, ‘সিনিয়ররা গিয়ে জুনিয়রদের থামাইছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি।’