খেলার খবর: বাংলাদেশ ক্রিকেট বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে যেমন কিছু সমীহ জাগানোর মতো সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, একইভাবে জয়ের খুব কাছ থেকে হেরেছে তারা। তবে সবকিছু মিলিয়ে দক্ষ ফিনিশারের অভাব নিয়ে আলোচনা হয়ে এসেছে সব সময়। সাব্বির রহমানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর শোনা যাচ্ছে মোহাম্মদ মিঠুনের নাম। তাই সাব্বিরের স্থানে দলে জায়গা পেলে নিজেকে কতটুকু তুলে ধরতে পারবেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান, সেই ব্যাপারে অনেক কথা ছড়িয়ে আছে ভক্তদের মাঝে। তবে নিজের ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মোহাম্মদ মিঠুন।
একজন ফিনিশারের ভূমিকায় নামতে হতে পারে মোহাম্মদ মিঠুনকে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ছয় কিংবা সাতে খেলানো হতে পারে তাঁকে। এটি এমন এক মুহূর্ত, যখন মাঠে থিতু হওয়ার জন্য কোনো বল ধরে খেলার সময় থাকে না। মিঠুন এই ব্যাপারে সচেতন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত আমি যা খেলেছি, সবই ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করেছি সব সময়। এমনকি আমি উইকেটে নেমে খুব বেশি সময় নিই না সেট হওয়ার জন্য। আমি প্রথম থেকেই রানের ধারাবাহিকতা রাখতে চেষ্টা করি। চেষ্টা করি স্ট্রাইক রোটেট করার জন্য। সুতরাং ছয় কিংবা সাত নম্বরে কিন্তু সেটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, নেমেই স্ট্রাইক রোটেট করতে হবে। এটি আমার ন্যাচারেই আছে, তাই খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই।’
তবে কিছুদিন আগেও মোহাম্মদ মিঠুনকে দেখা গেছে ওপেনারের ভূমিকায়। কিন্তু সেখানে খুব একটা আলো ছড়াতে পারেননি তিনি। তবে ছয়ে বা সাতে খেলার ব্যাপারে ধারণা আছে মিঠুনের। তাঁর মতে, ‘আমি যেহেতু ছোটবেলা থেকে এভাবেই খেলে অভ্যস্ত। হয়তো বা আগে নতুন বলে খেলতাম বা ওপরে অনেক সময় নিয়ে খেলতাম, এখন হয়তো সময় কম পাব। তবে ছয় কিংবা সাতে খেললে ১১০-১১৫, ১২০, ১৩০ স্ট্রাইক রেটে খেলতে হবে। একেক সময় পরিস্থিতি একেকটি ডিমান্ড করবে। তবে এ ধরনের স্ট্রাইক রেটে খেললে আমার মনে হয় যথেষ্ট ভালো হবে।’
মিঠুনকে দলে নেওয়ায় আশ্চর্য হয়েছেন অনেকে। কারণ, তিনি দলে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তেমনভাবে নজরে পড়েননি দর্শকদের। তবে এই নজরে আসার চেয়ে দলের জন্য খেলতে পছন্দ করেন মিঠুন। মিঠুন সাংবাদিকদের জানান, ‘দলের যখন প্রয়োজন হয়, তখন আসলে নিজের পছন্দকে ফোকাস করার কিছু নেই। প্রত্যেক মানুষেরই জীবনে একটি লক্ষ্য থাকে, তবে সবকিছুই যে পূরণ হবে এমন নয়। দলের স্বার্থে সব জায়গার জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেখানেই আমি খেলব, সেখানেই আমি চেষ্টা করব শতভাগ দেওয়ার এবং আমার দ্বারা যেন দল উপকৃত হয়, সেটি খেয়াল রাখব।’
তবে ছয়ে বা সাতে যে ফিনিশারের ভূমিকায় মিঠুনকে আসতে হতে পারে, সেখানে খেলার সম্ভাবনা আছে মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হাসান অপু কিংবা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দল বোলিংয়ে সুবিধা পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সেই স্থানে মোহাম্মদ মিঠুনের কাছ থেকে দল অতিরিক্ত কী পেতে পারে, এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন সমালোচকরা। মিঠুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যার জায়গায় খেলব সে হয়তো এক ধরনের ভূমিকা পালন করত, আমি ভিন্ন ভূমিকা পালন করব। আমি পুরোপুরি আলাদা একজন মানুষ। আমি হয়তো তাঁর থেকেও ভালো করতে পারি। আমার অবশ্যই আত্মবিশ্বাসটি থাকতে হবে এবং আমার দিক থেকে সম্ভাব্য সেরাটি দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে দারুণ ইনিংস খেলেছেন মিঠুন। দলে স্থায়ী হতে হলে নিজের ভূমিকায় শতভাগ উজাড় করতে হবে, তা জেনেই মাঠে নামবেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে ফিনিশারের সেই ভূমিকায় মিঠুন সতটা সফল হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।