নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চাঞ্চল্যকর ইউছুফ হত্যার স্বাক্ষ্যগ্রহণ শরু হয়েছে। মামলার বাদী’র স্বাক্ষ্য নিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক। এদিকে, মামলার অন্য স্বাক্ষীরা যাতে আদালতে স্বাক্ষ্য দিতে আসতে না পারে সেজন্য আসামী পক্ষ নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে বাদী পক্ষ জানিয়েছেন। এমনকি নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছেন তারা।
মামলার বাদী সাতক্ষীর্রা কালিগঞ্জ উপজেলার মুড়াগাছা গ্রামের মোহর আলী গাজীর ছেলে আব্দুস সাত্তার গাজী জানান, একই গ্রামের অমেদ আলী গাজীর ছেলে মোমিন গাজী ও তার স্ত্রী রহিমা বেগম ওরফে মুন্নী প্রতিবেশি হওয়ায় উভয় পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিলো। পরবর্তীতে মোমিনের স্ত্রী রহিমা বেগম শ্যামনগর উপজেলার গুমানতলী গ্রামে তার বাবা বশির সরদারের বাড়ীতে যেয়ে বসবাস শুরু করে। এরপরও তাদের সাথে তার (বাদী) সেজো ভাই ইউছুফ আলী গাজী যোগাযোগ রাখে এবং ওই বাড়ীতে যাতায়াত করে। ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রহিমা বেগমের বাড়ীতে দাওয়াত খেতে যায় তার ভাই ইউছুফ। রহিমার জামাই কালিগঞ্জের মুড়াগাছা গ্রামের মানিক সরদারের ছেলে জালাল উদ্দীন ইউছুফকে সন্ধ্য বেলা বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ইউছুফ আলী নিখোঁজ থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ১৪ সেপ্টেম্বর শ্যামনগরের চুনা নদীতে বস্তায় ভরা পঁচা, ফুলে ফেপে যাওয়া ইউছুফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিকল্পিতভাবে ইউছুফকে হত্যা করে চটের বস্তায় ভরে ইট দিয়ে চুনা নদীতে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। এব্যাপারে ইউছুফের ভাই আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৫। তারিখ-১৪-০৯-২০১৩। ধারা ৩০২/৩৪/২০১ পেনাল কোড। মামলায় আসামী করা হয় অমেদ আলী গাজীর ছেলে মোমিন গাজী , স্ত্রী রহিমা বেগম ওরফে মুন্নী ও জামাই জালাল উদ্দীন গাজীসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন। বাদী আরো জানান, দাওয়াত খেতে যাওয়ার দিন তাদের মাছের ঘরের আদায়কৃত এক লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা সাথে করে নিয়ে যায় তার ভাই ইউছুপ।
ঘটনার কয়েক বছর পর সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার কার্যক্রমে স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও হুমকি ধামকিসহ আসামীদের নানান ধরণের চাপ অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে বাদী আব্দুস সাত্তার আরো জানিয়েছেন, মামলা দায়েরের কয়েকমাস পর ২০১৪ সালের ১৯ আগষ্ট তারিখে সাতক্ষীরা আদালত থেকে বিকালে বের হলে আসামীরাসহ কয়েকজন ছুরি, ইট ও লোহার রড দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে তিনি মারাত্মক জখম হন। এব্যাপারে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আরো একটি মামলা করেন বাদী। মামলা নং-সি,আর,পি ৩৪৭/১৪ (সাতঃ)।
বাদী পক্ষের আইনজীবি জহুরুল হক জানান, সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত ১১ সেপ্টেম্বের মামলার বাদী স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার অপর স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য নেবেন বিজ্ঞ বিচারক। আইনজীবি আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুত মামলার রায় পাবো এবং হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন আদালত।