অনলাইন ডেস্ক: ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। এরপর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময়। নানান প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে আজকের এই স্থানে পৌঁছেছে ফেসবুক। আপডেট, নতুন ফিচার যুক্তসহ নানান কারণে ফেসবুকের কিছু সমস্যা মাঝে মাঝেই চোখে পড়ে। হ্যাকের মতো ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকবার।
আজ মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) এমনই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। সন্ধ্যা থেকে ফেসবুক লগ ইন করতে অথবা নিউজ ফিড ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন দেশীয় ব্যবহারকারীরা। ফলে বেশ বিপত্তিতে পড়তে হয় ব্যবহারকারীদের।
জানা যায়, অ্যাকাউন্টগুলিতে লগ ইন করার চেষ্টা করার সময় সমস্যা সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাছাড়াও ফেসবুকে ব্যবহারকারীরা অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করলে তাদের একটি বার্তা পাঠনো হচ্ছে ‘ফেসবুক এখন প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডাউন রয়েছে, তবে আপনি কয়েক মিনিটের মধ্যে ফিরে যেতে সক্ষম হবেন।’ এরপর আমরা এই চলমান ঘটনা সম্পর্কে এবং ফেসবুক অনলাইনে ফিরে আসার বিষয়ে পোস্ট করব। এমন সব লেখা পাঠাচ্ছে ফেসবুক।
তাছাড়াও অনেকে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে টুইটে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। তাদের টুইটে আরও জানা যায় ফেসবুকের সাথে আরেকটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্ট্রাগ্রামও ডাউন দেখাচ্ছে।
টুইটে কেবিন সিম্নস নামের একজন জানায়, আমার আজ জন্মদিন। জন্মদিনে আমি ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রাম ২৫ ভাগ ডাউন পাচ্ছি।
আলেকজেন্ডার নামের আরেকজন টুইটে জানান, আজকে খুব বিরক্তিকর সময় কাটাচ্ছি, ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রাম খুবই ডাউন।
এছাড়া সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিনিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গকে পদত্যাগ করতে অব্যাহত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের দোষ খুঁজে বের করতে ফেসবুক রিপাবলিকান মালিকানাধীন একটি রাজনৈতিক পরামর্শ ও পিআর ফার্মকে ভাড়া করেছে বলে নিউ ইয়র্ক টাইমসে খবর বেরিয়েছে।
এরপর থেকেই পদ ছাড়তে চাপ বাড়তে থাকে জুকারবার্গের ওপর। শনিবার ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ফেসবুকের বড় একটা অংশের মালিক ট্রিলিয়াম অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্টের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট জোনাস ক্রোনও জুকারবার্গকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। এর মালিক হলো ফেসবুক ইনক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
মার্ক জাকারবার্গ হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তার কক্ষনিবাসী ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্স এবং ক্রিস হিউজেসের যৌথ প্রচেষ্টায় ফেসবুক নির্মাণ করেন। ওয়েবসাইটটির সদস্য প্রাথমিকভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু পরে সেটা বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। আরও পরে এটা সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাই স্কুল এবং ১৩ বছর বা ততোধিক বয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সারা বিশ্বে বর্তমানে এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছেন ৩০০ মিলিয়ন কার্যকরী সদস্য।
ফেসবুক তার চলার পথে বেশ কিছু বাধার সম্মুখীন হয়েছে। সিরিয়া, চায়না এবং ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশে এটা আংশিকভাবে কার্যকর আছে। এটার ব্যবহার সময় অপচয় ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মচারীদের নিরুৎসাহিত করে তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফেসবুক ওয়েবসাইটকে আইন জটিলতায় পড়তে হয়েছে বেশ কয়েকবার জুকেরবার্গের সহপাঠী কর্তৃক, তারা অভিযোগ এনেছেন যে ফেসবুক তাদের সোর্স কোড এবং অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছে।
ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী ফেসবুকের মূলধন ২১২ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে উঠেছে।