শিক্ষা সংবাদ: প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জেএসসি-জেডিসিতে পাশের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় এ তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৮২ হাজার ৩৪২ জন। এবার পরীক্ষায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৮২৭ জন পরীক্ষার্থী বেশি অংশ নিয়েছে। পাস করেছে ২২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৯ জন। গত বছর পাস করেছিল ২০ লাখ ১৮ হাজার ২৭১ জন শিক্ষার্থী। এবার ২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৮ জন শিক্ষার্থী বেশি পাস করেছে।
এ বছর পাসের হার ৮৫.৮৩ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩.৬৫ শতাংশ। পাসের হার বেড়েছে ২.১৮ শতাংশ।
জেএসসিতে পাসের হার ৮৫.২৮ এবং জেডিসিতে ৮৯.০৪ শতাংশ। জেএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৫ জন শিক্ষার্থী। গত বছর পেয়েছিল ১ লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন, কমেছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৩৩ জন।
এবার শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৬৯ জন। গত বছর ছিল ৫ হাজার ২৭৯টি, কমেছে ৫১০টি প্রতিষ্ঠান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনে শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে।
জেএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৫ শিক্ষার্থী। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ কমেছে। চতুর্থ বিষয় ছাড়াই ফল নির্ধারণ করায় এবার জিপিএ-৫ কমেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
ফলের সারসংক্ষেপ হাতে পেয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় পাস করা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার কারণে শিক্ষার্থীদের ভয় কেটে গেছে।
গত কয়েক বছর ধরেই পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনীর ফল একই দিনে প্রকাশ করা হচ্ছে। সাধারণত ডিসেম্বর শেষ দিকে এ ফল ঘোষণা করা হলেও এবার ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের তারিখ থাকায় আগেই ফল ঘোষণা করা হল।
গত ১৮ থেকে ২৬ নভেম্বর প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হয়। এক মাসেরও কম সময়ে পিইসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হল এবার। এ পরীক্ষায় ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ ক্ষুদে শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
১ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেএসসি-জেডিসিতে অংশ নেয় ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী।
যেভাবে জানা যাচ্ছে ফল
মোবাইল ফোন থেকে DPE লিখে স্পেস দিয়ে থানা/উপজেলার কোড নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে প্রাথমিক সমাপনীর ফল জানা যাবে।
আর ইবতেদায়ির ফল পেতে EBT লিখে স্পেস দিয়ে থানা/উপজেলার কোড নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
এসএমএস লেখার সময় সরকারি অথবা রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের EMIS কোড নম্বরের প্রথম পাঁচ সংখ্যা উপজেলা/থানা কোড হিসেবে ব্যবহার করতে হবে, যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জানা যাবে।
এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইট এবং টেলিটকের ওয়েবসাইট থেকেও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনীর ফল জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে যে কোনো মোবাইল থেকে JSC/JDC লিখে স্পেস দিয়ে নিজ বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে 2018 লিখতে এসএমএস করলে ফিরতি এসএমএসে জেএসসি/জেডিসির ফল জানিয়ে দেয়া হবে।
এ ছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকেও জেএসসি-জেডিসির ফল জানা যাবে।